ঢাকা, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ৯ জিলকদ ১৪৪৫

যাত্রার প্রথম দিনেই ট্রেনের গতিরোধ, ফরিদপুরে যাত্রাবিরতির দাবি

প্রকাশনার সময়: ০৫ মে ২০২৪, ১৬:২০

রাজবাড়ী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী ‘চন্দনা কমিউটার’ ট্রেনের গতিরোধ করে ফরিদপুরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন স্থানীয়রা। ফরিদপুর রেলস্টেশনে স্টপেজ দেওয়ার দাবিতে এ অবস্থান কর্মসূচি ও মানববন্ধন পালন করা হয়। এর আগে শনিবার (৪ মে) আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করা হয়। এবং রোববার (৫ মে) থেকে ট্রেনটি প্রথম বাণিজ্যকভাবে যাত্রা শুরু করে। এদিন ভোর ৫টা ১৫ মিনিটে ফরিদপুর রেলস্টেশনে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হয়। পরে ৫টা ৪০ মিনিটে ট্রেনটি ফরিদপুর পৌঁছালে বিক্ষুব্ধরা ট্রেনটির সামনে অবস্থান নেয় এবং গতিরোধ করে। এ সময় তারা ফুল দিয়ে ট্রেনের চালক, পরিচালকসহ অন্যান্যদের শুভেচ্ছা জানান।

রেলওয়ে সূত্র জানা যায়, রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করতে রাজবাড়ী-ভাঙ্গা-ঢাকা পথে রোববার থেকে বাণিজ্যিকভাবে নতুন করে এক জোড়া কমিউটার ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। তবে মাঝপথে ফরিদপুর রেলস্টেশনে কোনো যাত্রাবিরতি না থাকায় এ নিয়ে ফরিদপুরের রেলযাত্রীদের মাঝে চরম অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। তারা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য রেলমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।

বিক্ষোভের মুখে এ সময় প্রায় দশ মিনিট ট্রেনটি সেখানে অবস্থান করে। পরে অবস্থানকারীরা সরে গেলে ট্রেনটি ৫টা ৫০ মিনিটের দিকে ভাঙ্গা হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এর আগে সেখানে স্থানীয়দের পক্ষে বক্তব্য দেন রেল আন্দোলন কর্মী আবরার নাদিম ইতু, শরিফ খান, তুহিন বিন আলমগীর, আশিষ কুমার কুন্ডু, সেলিম মিয়া, আলী মকিম, ইকবাল হোসেন, সোহান, আরিফ শেখ, ইকবাল মাহমুদ ইমন প্রমুখ।

বক্তাগণ রেল যোগাযোগ চালু করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বর্তমান সরকারের সাফল্যের আরেকটি নতুন অধ্যায় শুরু হলো রাজবাড়ী থেকে ভাঙ্গা হয়ে ঢাকার সঙ্গে নতুন দুটি কমিউটার ট্রেন চালু। তবে অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো, ফরিদপুরের ওপর দিয়ে গেলেও ফরিদপুর রেলস্টেশনে কোনো স্টপেজ রাখা হয়নি। এতে ফরিদপুরের যাত্রীরা সুলভে ঢাকার সঙ্গে যাতায়াতের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হলো। বক্তাগণ অনতিবিলম্বে ফরিদপুর রেলস্টেশনে এই চন্দনা কমিউটার ট্রেনের স্টপেজ দাবি করেন।

এদিকে বিক্ষুব্ধদের অবস্থানের মুখে চন্দনা কমিউটার ট্রেনের পরিচালক মহিবুল ইসলাম তাৎক্ষণিক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ সময় তিনি বলেন, আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। তারা হয়তো এ বিষয়টি ভেবে সিদ্ধান্ত জানাবেন।

মূলত একটি ট্রেন দুটি ইঞ্জিন দিয়ে পরিচালিত হবে দুটি রুটে দুটি নামে। রাজবাড়ী থেকে ট্রেনটি এসে ভাঙ্গায় যাত্রাবিরতি নেবে। সেখানে ইঞ্জিন বদলে আবার ঢাকা যাবে। এর মধ্যে ঢাকা-ভাঙ্গা রুটে ১২১ ও ১২৪ নম্বর ট্রেনটির নাম প্রস্তাব করা হয়েছে ‘ভাঙ্গা এক্সপ্রেস’। আর ভাঙ্গা-রাজবাড়ী রুটে ১২২ ও ১২৩ নম্বর ট্রেনের নাম নির্ধারণ করা হয়েছে ‘চন্দনা এক্সপ্রেস’।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, ট্রেনটি প্রতিদিন সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ভাঙ্গা স্টেশন থেকে ছেড়ে শিবচর স্টেশন, পদ্মা স্টেশন পদ্মা সেতু ও মাওয়া স্টেশন হয়ে ৯টার মধ্যে ঢাকার কমলাপুর পৌঁছাবে। এর আগে ট্রেনটিই রাজবাড়ী থেকে ছেড়ে আসবে ভোর ৫টায়। সন্ধ্যা ৬টায় ট্রেনটি কমলাপুর থেকে আবারও একই রুটে ফিরে আসবে। কর্মজীবী যাত্রী ও শিক্ষার্থীরা এই ট্রেনে চড়ে স্বল্প খরচে বাড়ি থেকে ঢাকা যাতায়াত করতে পারবেন।

রাজবাড়ী-ভাঙ্গা-ঢাকা রুটে চলাচলকারী এই কমিউটার ট্রেন ২৪টি প্রথম, ৪৪টি শোভন চেয়ার এবং ৪২৪টি শোভন শ্রেণির আসনের ব্যবস্থা থাকবে। উভয় পথে ভাঙ্গা জংশন, শিবচর, পদ্মা ও মাওয়া স্টেশনে যাত্রাবিরতি থাকবে। সাপ্তাহিক বন্ধ শুক্রবার। এই ট্রেনে শোভন চেয়ারে শিবচর থেকে ঢাকার ভাড়া ২০৫ টাকা এবং ভাঙ্গা থেকে ঢাকা ২২৫ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। এই রেলপথ দিয়ে বেনাপোল এক্সপ্রেস, সুন্দরবন, মধুমতি ও নকশীকাঁথা এক্সপ্রেস চলাচল করে। চারটি ট্রেনেরই ফরিদপুরে যাত্রাবিরতি রয়েছে। কিন্তু চন্দনা কমিউটার ট্রেনের যাত্রাবিরতি ফরিদপুর রেলস্টেশনে না থাকায় এই বিক্ষোভ করে স্থানীয়রা।

নয়াশতাব্দী/ডিএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ