ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

মধ্যরাত থেকে ইলিশ শিকারে নামবেন জেলেরা

প্রকাশনার সময়: ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২২:৫৪

দেশের অভয়াশ্রমে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে। দীর্ঘ দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে মাছ শিকারের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ভোলার জেলেরা। দীর্ঘদিন পর নদীতে গিয়ে আশানুরূপ মাছ পাবেন, এমনটাই আশা তাদের। এরই মধ্যে মাছ শিকারের সকল উপকরণ প্রস্তুত করেছেন জেলেরা।

জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর কঠোর অভিযান হয়েছে। এজন্য মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। কাঙ্খিত মাছ শিকার করে সংসারের অচল চাকা সচল করার আশায় বুক বাঁধছেন জেলেরা।

চরফ্যাশন উপজেলার সামরাজ ঘাট এলাকার জেলে হাসান বেপারী বলেন, আমরা মাছ ধরতে সকল ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। জাল নৌকা মেরামত করেছি। নিষেধাজ্ঞার সময়টা আমাদের অনেক কষ্টে কেটেছে। আশা করি নদীতে এবার মাছ পাওয়া যাবে। কাঙ্খিত মাছ পেলে আমাদের সংসারের দুরবস্থা কিছুটা লাগব হবে।

ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের ভোলার খাল ও ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতুলি জেলে পল্লীতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দীর্ঘ দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ শিকারের জন্য জাল, নৌকা, ট্রলারসহ বিভিন্ন উপকরণ প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলার প্রায় আড়াই লাখ জেলে। নিষেধাজ্ঞা শেষে দল বেঁধে আবারও নদীতে নামবেন তারা।

ভোলার খাল এলাকার জেলেরা জানান, দুই মাসের নিষেধাজ্ঞার কারণে আমরা নদীতে গিয়ে মাছ ধরতে পারিনি। এখন নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে যাওয়ার জন্য নৌকা, ট্রলার, জালসহ মাছ শিকারের সকল সামগ্রী প্রস্তুত করেছি। জেলেরা দল বেঁধে নদীতে গিয়ে ইলিশ, পোয়াসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ ধরবো।

লালমোহনের বাত্তির খাল এলাকার দুলাল মাঝি ও নাছির মাঝি বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় আমাদের আয় রোজগার বন্ধ ছিল। তাই ধার-দেনা করে সংসার পরিচালনা করেছি। তার আগে এনজিও ও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে জাল, নৌকা, ট্রলার তৈরি করেছি। সেই ঋণের কিস্তি নিষেধাজ্ঞার মধ্যে দিতে না পেরে পালিয়ে বেড়িয়েছি। এখন নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে গিয়ে বড় সাইজের ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ, পোয়াসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ শিকার করে বকেয়া কিস্তি ও ধার-দেনা পরিশোধ করবো।

ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কামাল আজাদ দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা সফলভাবে সম্পূর্ণ করেছেন দাবি করে জানান, নদীতে বর্তমানে প্রচুর পরিমাণ ইলিশসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ রয়েছে। তাই নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা নদীতে গিয়ে কাঙ্ক্ষিত মাছ পেয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন। আর সেইসঙ্গে ভোলায় ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুই মাসের অভিযান কঠোরভাবে পালিত হয়েছে। জেলেদের নদীতে নামতে দেয়া হয়নি। সম্মিলিতভাবে অভিযান পরিচালনা করায় এবার লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ইলিশ আহরণ হবে।

এদিকে দীর্ঘ দুই মাস বন্ধ থাকার পর চালু হচ্ছে ইলিশের ঘাট ও আড়তগুলো। রাত পোহালেই ঘাটে ভিড়বে ইলিশ। ক্রেতা-বিক্রেতা ও আড়তদারদের হাঁকডাকে সরগরম হয়ে উঠবে ঘাটগুলো। একই সঙ্গে চালুর অপেক্ষায় রয়েছে বন্ধ থাকা বাকি চারটি বরফকল।

ইলিশের আভয়াশ্রমের কারণে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকায় ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ইলিশসহ সব ধরণের মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা চলছে।

নয়া শতাব্দী/এনএইচ/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ