ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

নদীতে ডুবল আনিকার পুলিশ হওয়ার স্বপ্ন

প্রকাশনার সময়: ২৩ মার্চ ২০২৪, ১৮:১০

নরসিংদী মডেল কলেজের শিক্ষার্থী আনিকা আক্তার। এবার এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তার স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা শেষে পুলিশের বড় অফিসার হবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন পুরণের আগেই ট্রলার ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ হন।

শুক্রবার (২২ মার্চ) বিকেলে আনিকা আক্তার তার বান্ধবীর সাথে ট্রলারে মেঘনা নদীতে ঘুরতে এসে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনার শিকার হন।

আনিকা আক্তার নরসিংদীর বেলাব থানার দড়িকান্দি গ্রামের দারু মিয়ার মেয়ে।

নিখোঁজ হওয়ার ২২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও জীবিত কিংবা মৃত আনিকাকে উদ্ধার করতে পারেনি ডুবুরি দল।

শুক্রবার বিকেলে ভৈরব সৈয়দ নজরুল ইসলাম সড়ক সেতু সংলগ্ন মেঘনা নদীতে সুন্দরবন নামে পর্যটনবাহী একটি ভ্রমণতরী ট্রলার ডুবিতে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে। এঘটনায় ঘটনাস্থলেই সুবর্ণা নামে এক মহিলার মৃত্যু হয় এবং তোফাজ্জল হোসেনসহ ৭জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ ও স্থানীয়রা।

এসময় ভৈরব হাইওয়ে পুলিশের কনস্টেবল সোহেল রানা (৩৫), তার স্ত্রী মৌসুমি আক্তার (২৫), দুই সন্তান মাহমুদা (৭) ও ছেলে রায়সুল (৫), ভৈরব পৌর শহরের আমলাপাড়া এলাকার ঝন্টু দে এর স্ত্রী রুপা দে (৩০), তার ভাইয়ের মেয়ে আরাধ্য (১২) ও ভগ্নিপতি বেলন দে (৩৮) এবং নরসিংদীর বেলাবো থানার দড়িকান্দি গ্রামের দারু মিয়ার মেয়ে কলেজ পড়ুয়া আনিকা আক্তার (১৮) নিখোঁজ হন।

নিখোঁজ আনিকা আক্তারের বড় ভাই জানান, ছোট বেলা থেকেই আনিকা স্বপ্ন দেখতো সে পুলিশ হবে। এবছর নরসিংদী মডেল কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় এ প্লাস পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। শুক্রবার দুপুরে বান্ধবী রুবার বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে বের হয় ভৈরব ব্রিজে ঘুরতে আসেন। বান্ধবী রুবা তার প্রেমিকা সাথে নিয়ে আসে ভৈরব মেঘনা নদীর ব্রিজের নিচে। সেখান থেকে চরে যাওয়ার জন্য রুবা ও তার প্রেমিকের সঙ্গে আনিকাও নৌকায় উঠে।

নৌকায় ভ্রমণ শেষে ভৈরব ফেরার পথে একটি বাল্কহেড নৌকা সুন্দরবন নামক ভ্রমণতরীকে ধাক্কা দিলে সাথে সাথে নদীতে ডুবে যায়। এসময় বান্ধবী রুবা ও তার প্রেমিক বেঁচে গেলেও আনিকার স্বপ্ন পানিতেই ডুবে যায়। ঘটনার পরপর শুক্রবার রাতে ভৈরব ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা নদীতে প্রাথমিক উদ্ধার কাজ শুরু করে রাতে বিরতি দেন। পরে শনিবার (২৩ মার্চ) সকাল ৮টায় কিশোরগঞ্জ ও নারায়নগঞ্জ থেকে দুটি ডুবুরি দল এসে নদীতে উদ্ধার কাজ শুরু করেন। তাদের সাথে যৌথ অভিযানে অংশ নেন বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধার ইউনিট প্রত্যয়।

দুপুর একটার দিকে ডুবে যাওয়া ট্রলারের সন্ধ্যান পান বলে জানান উদ্ধার ইউনিট প্রত্যয় এর কমান্ডার ওবায়দুল করিম খান।

এসময় ঘটনাস্থল থেকে নিখোঁজ ৮জনের মধ্যে পুলিশ সদস্য সোহেলর স্ত্রী মৌসুমি আক্তার ও মেয়ে মাহমুদার মৃতদেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হন। ঘটনার ২২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কলেজ শিক্ষার্থী আনিকাসহ নিখোঁজ ৬ জনকে উদ্ধার করতে পারেনি। নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধার না করা পর্যন্ত উদ্ধার কাজ অব্যাহত থাকবে বলে দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে জানান কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার রাসেল শেখ।

এসময় নৌ পুলিশ কিশোরগঞ্জ অঞ্চলের এসপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসপি হুমায়ুন কবীর আকন্দ, ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম গোলাম মোর্শেদ খান, আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম, ভৈরব হাইওয়ে পুলিশ অফিসার ইনচার্জ মো. সাজু মিয়া ও নৌ পুলিশের অফিসার ইনচার্জ কেএম মনিরুজ্জামান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ