ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পাচ্ছেন টাঙ্গাইলের ৯০ জন

প্রকাশনার সময়: ১৪ মার্চ ২০২৪, ১৯:৫৮

শতভাগ মেধা যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে টাঙ্গাইলে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদের নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে টাঙ্গাইলে পুলিশের চাকরি পাচ্ছেন ৯০ জন তরুণ-তরুণী।

বুধবার (১৩ মার্চ) রাত ১১টার দিকে পুলিশ লাইন্সে আনুষ্ঠানিকভাবে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ পরে পুলিশ সুপার সকলের নিজ হাতে ফুলেল শুভেছা জানান।

এই চাকরি পেতে অনলাইনে জনপ্রতি খরচ হয়েছে মাত্র ১২০ টাকা। কোনো রকম তদবীর বা অর্থ লেনদেন ছাড়াই বাছাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। অভিভাবকরাও বিষয়টি স্বপ্নের মতো দেখেছেন।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কনস্টেবল নিয়োগ পাওয়ার জন্য অনলাইনে ৪ হাজার ৫০ জন চাকরি প্রত্যাশী আবেদন করেন। এদের মধ্যে ৩ হাজার ৯৮ জন মাঠে উপস্থিত ছিলেন। যাচাই-বাছাই শেষে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় ১ হাজার ৬০ জন। এর মধ্যে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ১ হাজার ৫৮ জন। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় ৩০২ জন।

এর মধ্যে থেকে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে সম্পূর্ণ মেধার ভিত্তিতে চূড়ান্ত করা হয় ৯০ জনের নাম। এদের মধ্যে ১৪ জন নারী এবং ৭৬ জন পুরুষ। নিয়োগ প্রাপ্তদের মধ্যে অনেকেই কৃষক, দিনমজুর, অটোচালকসহ হত দরিদ্র পরিবারের সন্তান রয়েছেন।

পুলিশ কনস্টেবল পদে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হওয়ায় সবাই আনন্দিত। আবার অনেকেই ঘোষণা শোনে আনন্দে কেঁদেও ফেলেন।

তারা বলেন, ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছে ছিল পরিবার, সমাজ ও দেশের মানুষের জন্য কিছু করার। সেই ইচ্ছা থেকেই পুলিশে আবেদন করি। ঘুষ ছাড়াও যে পুলিশে চাকরি হয় তার প্রমাণ আমরা নিজেরাই। আগামীতে দেশের স্বার্থে মানুষের সেবা করার জন্য সবার দোয়া চাই।

গোপালপুর উপজেলার অটোচালক আইয়ুব নবীর ছেলে নাজমুল হোসেন চূড়ান্ত ফলাফল উর্ত্তীণ হয়েছেন।

নাজমুল হোসেন বলেন, জীবনের কষ্টগুলো হয়তোবা দূর হবে এখন। বাবা যখন অটো নিয়ে সকালে বের হয়ে যেতেন, তখন মনে হয় এই কষ্টের শেষ হবে কবে। পুলিশের একজন সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর মনে হচ্ছে বাবার কষ্টটা একটু হলেও কমাতে পারবো। নাজমুলের বাবা আইয়ুব নবী বলেন, ছেলেকে নিয়ে খুবই চিন্তিত ছিলাম। কারণ মানুষের কাছে শুনেছি এখন সরকারি চাকরি পেতে গেলেই টাকা লাগে। কিন্তু মাত্র ১২০ টাকা দিয়ে যে পুলিশে চাকরি হবে কখনো কল্পনাও করেনি।

টাঙ্গাইল পৌরসভার সাকরাইল চরপাড়ার মৃত পুলিশ সদস্য সুরমান আলীর মেয়ে সুমা আক্তার বলেন, মায়ের ইচ্ছে ছিল বাবার মতো পুলিশ সদস্য হব। তাই ছোটবেলা থেকে মায়ের কথা অনুযায়ী চলাফেরা করেছি। আজ বাবার মতো পুলিশ সদস্য হওয়ায় স্বপ্ন এক ধাপ এগিয়ে গেছি। বাবার যেমন ইচ্ছে ছিল মানুষের সেবা করার, তেমনি আমিও সেবা করব।

এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের জন্য স্মার্ট পুলিশ দরকার। স্মার্ট পুলিশ প্রধান প্রত্যয় নিয়ে আমরা নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দক্ষ, মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রার্থীদের খুঁজে বের করেছি। এছাড়া আরও ১৩ জনকে অপেক্ষমান তালিকায় রাখা হয়েছে। প্রত্যেক চাকরি প্রার্থীদের ব্যাংক ড্রাফটের জন্য মাত্র ১২০ টাকা খরচ হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, সামনে তাদের টাঙ্গাইলে মেডিকেল টেস্ট করা হবে। পরবর্তীতে ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে চূড়ান্ত মেডিকেল টেস্ট করিয়ে ট্রেনিংয়ের জন্য পাঠানো হবে।

নয়াশতাব্দী/টিএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ