ঢাকা, রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

নওমুসলিম স্বামীর মুক্তি চেয়ে নওমুসলিম স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশনার সময়: ০৬ মার্চ ২০২৪, ১৩:২০

নওমুসলিম স্বামী মো. ইব্রাহিম ওমরের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নি:শর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন তার স্ত্রী নওমুসলিম জান্নাতুল ইসলাম স্নেহা।

বুধবার (৬ মার্চ) বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জান্নাতুল ইসলাম স্নেহা বলেন, ইসলামের সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হয়ে গত বছরের ২ নভেম্বর স্বেচ্ছায়, স্বজ্ঞানে ‘ইসলাম’ ধর্ম গ্রহণ করি। আমি প্রাপ্ত বয়স্কা এবং সাবালিকা বিধায় আমার আইনত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার পূর্ণ জ্ঞান এবং অধিকার রয়েছে। ‘ইসলাম’ ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে আমি বিজ্ঞ প্রথম শ্রেণির চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ঢাকা থেকে ‘সনাতন’ থেকে ‘ইসলাম’ ধর্মে পরিবর্তন সংক্রান্ত হলফনামা সম্পন্ন করি। আমার স্বামীও প্রায় আড়াই বছর পূর্বে ‘সনাতন’ থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। গত বছরের ৫ নভেম্বর ইসলাম পালনের সুবিধার্থে এবং মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই।

তিনি বলেন, বিষয়টি আমার মা-বাবা এবং আত্মীয়-স্বজন জানতে পারেন এবং তারা আমার সংসার ভাঙার পায়তারা শুরু করেন। আমাকে জোরপূর্বক পূর্বের ধর্ম গ্রহণ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন এবং আমার স্বামীকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছেন। যা এখনো অব্যাহত।

নওমুসলিম জান্নাতুল ইসলাম স্নেহা বলেন, আমার মা বাদী হয়ে গত ১৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় নারী ও শিশু দমন আইনে আমাকে অপহরণ করা হয়েছে- এই অজুহাতে ইব্রাহিম ওমরের নামে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় আমার মা দাবি করেন, আমাকে নাকি ফুসলিয়ে অপহরণ করা হয়েছে- যা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা, একদমই অবান্তর! ‘ইসলাম’ ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার জন্য এবং মো. ইব্রাহিম ওমরকে বিয়ে করার জন্য আমাকে কেউ জোর করেনি, ভয় দেখায়নি, ধমক দেয়নি কিংবা টাকা পয়সার লোভও দেখায়নি। সুতরাং এখানে অপহরণ করার তো প্রশ্ন-ই আসে না!

আমার স্বামী মো. ইব্রাহিম ওমরের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা এবং সাজানো দাবি করে জান্নাতুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমার নির্দোষ স্বামীর জামিন মঞ্জুর এবং এই মামলাটি মিথ্যা বিবেচনা করে খারিজ করে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্র ও আদালতের কাছে জোর আবেদন জানাচ্ছি। বিজ্ঞ আদালতে আমার দেওয়া ২২ ধারা জবানবন্দিতে পরিষ্কার বলেছি এবং এখনও বলছি, আমি স্বেচ্ছায় ধর্মান্তরিত হয়েছি। স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছি। আমি স্বামীর কাছে থাকতে চাই, মা-বাবার কাছে যেতে চাই না’।

জান্নাতুল ইসলাম স্নেহা বলেন, চট্টগ্রাম আদালত আমার ২২ ধারা জবানবন্দি বিবেচনা করে, আমাকে নিজ জিম্মায় ছেড়ে দিয়েছিলেন। তখন চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে আমার পরিবার-পরিজনসহ কিছু উগ্রবাদী, চরমপন্থীদের মদদ-পুষ্টরা হট্টগোল শুরু করে এবং উস্কানিমূলক শ্লোগান দিতে থাকে। এক পর্যায়ে আমাকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়। পরে প্রশাসন এবং আইনজীবীর সহায়তায় আমি নিরাপদ অবস্থানে পৌঁছাই।

‘আমি প্রশাসনকে বলতে চাই, এই উগ্রপন্থী সন্ত্রাসী এবং তাদের মদদ-দাতাদের চিহ্নিত করে, আইনের আওতায় নিয়ে আসাটা সময়ের দাবি। এরা এই দেশ এবং দেশের জনগণের সাংবিধানিক অধিকার হরণ করছে। এরা ব্যক্তিগত ইস্যুকে উস্কানি দিয়ে সাম্প্রদায়িকতার দিকে নিয়ে যাওয়ার পায়তারা করছে’।

এসময় প্রশ্ন রেখে জান্নাতুল ইসলাম স্নেহা বলেন, সকল ধর্মান্তরিত মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কিন্তু ৯৫ ভাগ মুসলিম দেশে কেনো আমাদের নিরাপত্তা নেই? কেনো আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই সরকারের কাছে আমার স্বামী ইব্রাহিম ও আমাদের জীবনের নিরাপত্তার জোর দাবি জানাচ্ছি।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন নওমুসলিম ইব্রাহিম ওমরের ভাই মুহম্মদ আল আমীন, ভাগিনা আশিকুর রহমানসহ অনেকে।

নয়াশতাব্দী/এমএইচ/এনএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ