ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

বউভাতের খরচ বাঁচিয়ে বই বিতরণ নবদম্পতির

প্রকাশনার সময়: ১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮:৩১

নিজেদের বউভাত অনুষ্ঠানের আয়োজন সীমিত করে খরচ বাঁচিয়ে সেই টাকা দিয়ে ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ নিয়েছেন বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার মাধব-সাথী দম্পতি। সেই টাকায় তারা স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিচ্ছেন গল্প, উপন্যাসসহ বিভিন্ন ধরনের বই।

২০২৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর চিতলমারী সদর ইউনিয়নের কালশিরা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মাখন লাল ব্রাহ্মণের ছেলে মাধব চন্দ্র ব্রাহ্মণের সঙ্গে রায় গ্রামের অমল ঢালীর মেয়ে সাথী ঢালীর বিয়ে হয়।

বিয়ের এক মাস পর পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী, গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলে কালিদাস বড়াল স্মৃতি (ডিগ্রি) মহাবিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেন বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন লেখকের ৫ শতাধিক বই। মাধন-সাথী দম্পতি এই কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী।

এ সময় কলেজের অধ্যক্ষ স্বপন কুমার রায়, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও চিতলমারী উপজেলা চেয়ারম্যান অশোক কুমার বড়ালসহ শিক্ষাক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

বিয়ের অনুষ্ঠানে মাধব চন্দ্র ও সাথী ঢালী ছবি: সংগৃহীত

দম্পতির পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১৫ ডিসেম্বর পারিবারিকভাবে মাধব চন্দ্র ব্রাহ্মণের সঙ্গে সাথী ঢালীর বিয়ে হয়। পরদিন রেওয়াজ অনুযায়ী বরের বাড়িতে বউভাতের আয়োজন করা হয়। তবে বর মাধন চন্দ্রের আগে থেকেই ইচ্ছা ছিল বিয়ের পর তার ও তার স্ত্রীর স্কুল-কলেজের বর্তমান সব শিক্ষার্থীকে বই উপহার দেওয়ার। মাধব বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) শাখায় কর্মরত।

শিক্ষার্থীদের বই উপহার দেওয়ার বিষয়ে কালিদাস বড়াল স্মৃতি (ডিগ্রি) মহাবিদ্যালয়ে অধ্যক্ষ স্বপন কুমার রায় বলেন, শিক্ষার্থীদের বই পড়ায় উৎসাহিত করতে এবং আলোকিত মানুষ হতে উদ্বুদ্ধ করতে এই উদ্যোগ স্মরণীয় হয়ে থাকবে। মাধবসহ কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা মিলে প্রতি বছর নবীণ বরণে শিক্ষার্থীদের গাছের চারা উপহার দেন।

মাধব চন্দ্র ব্রাহ্মণ বলেন, বিয়ের পর সবাই তো বউভাতে দাওয়াত করে খাওয়ার আয়োজন করে। আমার ইচ্ছে ছিল খাবারের আয়োজনে অনেক বেশি খরচ না করে, যেসব স্কুলে-কলেজে পড়ছি, আমার স্ত্রী যেসব জায়গায় পড়ছে, সেখানের সব বর্তমান শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে একটি করে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত বই উপহার দেব। সেই চিন্তা থেকে বিষয়টি আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করি। বৃহস্পতিবার আমরা বই দেওয়া শুরু করেছি। এই কলেজে আমি এবং আমার স্ত্রী দুজনই পড়েছি। পর্যায়ক্রমে আমাদের পড়ালেখা করা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থীদের মাঝে বই উপহার দিতে চাই।

চিতলমারী উপজেলা চেয়ারম্যান অশোক কুমার বড়াল বলেন, ছেলেটা আসলেই বই পাগল। তার নিজস্ব একটা লাইব্রেরিও রয়েছে। তার অবসর সময়ে সে গ্রামের সাধারণ মানুষকে তার লাইব্রেরি থেকে পড়ার জন্য বই দিয়ে থাকে। তার উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ