ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

চাঙার কৌশল ‘ইফতার’

প্রকাশনার সময়: ১৬ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৪, ০৮:৫৯

প্রতি বছরের ন্যায় এবারো রমজান মাসজুড়েই বিএনপির মূল ফোকাস থাকবে ‘ইফতার রাজনীতিতে’। কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরে আয়োজন করা হবে ইফতার মাহফিল। পাশাপাশি মাসজুড়েই চলবে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পুনর্গঠন প্রক্রিয়া। কেন্দ্রীয়ভাবে বিদেশি কূটনীতিক, রাজনীতিবিদ ও পেশাজীবীদের সম্মানে ইফতার-মাহফিলের আয়োজন করা হবে। এর মাধ্যমে নেতাকর্মীসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের লোকজনের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে কাজ করবে। রমজান মাসকে আন্দোলনের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে নেতাকর্মীদের চাঙা করার উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপির হাইকমান্ড।

সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার প্রথম রোজায় এতিম ও আলেমদের সম্মানে ইফতার মাহফিলের মধ্য দিয়ে এই কার্যক্রম শুরু করেছে বিএনপি। পাশাপাশি সাজাপ্রাপ্ত, কারাবন্দি এবং অসহায় নেতাকর্মীদের পরিবারের জন্য দলের পক্ষ থেকে পাঠানো হবে ইফতারসামগ্রী। রোজার মাসে রাজপথে তেমন কোনো কর্মসূচি না থাকলেও বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ইস্যুতে লিফলেট বিতরণের মতো কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানা গেছে।

বিএনপি নেতারা জানান, ফের ঘুরে দাঁড়াতে রমজান মাসকে কাজে লাগাতে চায় বিএনপি। মহানগর, জেলা ও উপজেলায় গুম-খুন নির্যাতনের শিকার নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যদের সম্মানে ইফতার আয়োজন করা হবে। দলের অধিকাংশ ইফতার মাহফিলে লন্ডন থেক ভার্চুয়াল যুক্ত হয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নেতাকর্মীদের সহানুভূতি জানাবেন এবং বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেবেন। এতে করে দলের নেতাকর্মীরা আরও উজ্জীবিত হবেন; যা আগামী দিনে আন্দোলনের জন্য সহায়ক হবে বলে মনে করেন তারা।

জানা গেছে, দেশের সাংগঠনিক ১০ বিভাগ, জেলা, থানা পর্যায়েও বিএনপির পক্ষ থেকে ইফতার মাহফিলের আয়োজন থাকবে। এসবের পাশাপাশি মিত্র দলগুলোর ইফতার মাহফিলে বিএনপির সিনিয়র নেতারা অংশ নেবেন। সার্বিক ইফতার কর্মসূচি নির্বিঘ্ন করতে পুলিশের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হবে দলের পক্ষ থেকে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর ‘চূড়ান্ত’ ধাপের আন্দোলনে আর উত্তাপ ছড়াতে পারেনি দলটি। গ্রেপ্তার আতঙ্কে আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় রাজপথে দেখা মেলেনি শীর্ষ নেতাদের। দ্বাদশ নির্বাচনের পর আগের মতো রাজপথে নেই হরতাল-অবরোধ। নেই আগের মতো ধর-পাকড়। গ্রেপ্তার আতঙ্কও অনেকটা কেটে গেছে। এরপরেও ব্যর্থ আন্দোলনের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আরেকটু সময় নিয়ে ফের রাজপথের কঠোর আন্দোলনে যেতে চায় বিএনপি। এজন্য আন্দোলনের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে রমজান মাসকে বেছে নিয়েছে দলটি। ইফতার রাজনীতির মাধ্যমে দলের নেতাকর্মীদের চাঙা করার উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপির হাইকমান্ড।

সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয়ভাবে কয়েকটি ইফতার মাহফিলের আয়োজন করবে বিএনপি। যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দল ও জোটগুলো ইফতারের আয়োজন করবে, সেখানেও বিএনপির শীর্ষ নেতারা বক্তব্য দেবেন। এ ছাড়া ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণে বিএনপির উদ্যোগে বিভিন্ন থানায় থানায় ইফতারের আয়োজন থাকবে। এতে দলের কেন্দ্রীয় এবং সমমনা দলের শীর্ষ নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দলীয়ভাবে পাঁচ শতাধিক ইফতার আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির। এতে গুরুত্ব পাবেন চলমান আন্দোলনে নির্যাতিত নেতাকর্মী এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা। এ ছাড়া গুম-খুন নির্যাতনের শিকার নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যদের সম্মানে ইফতার আয়োজন করা হবে। পাশাপাশি সাজাপ্রাপ্ত, কারাবন্দি এবং অসহায় নেতাকর্মীদের পরিবারের জন্য দলের পক্ষ থেকে পাঠানো হবে ইফতারসামগ্রী। রোজার মাসে রাজপথে তেমন কোনো কর্মসূচি না থাকলেও বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ইস্যুতে লিফলেট বিতরণের মতো কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানা গেছে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারো ইফতার মাহফিলের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। যে যেভাবে পারবে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করবে। জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে পুরো রমজান মাসজুড়েই থাকবে এ আয়োজন। এতে জেলা বা উপজেলার যেসব কেন্দ্রীয় নেতা রয়েছে তারা অংশ নেবেন। এ ছাড়া নেতাকর্মীরা তাদের সাধ্য অনুযায়ী অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবে।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উদ্যোগে একাধিক ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হতো। কিন্তু তিনি মিথ্যা মামলায় দীর্ঘদিন কারাগারে বন্দি। তবে দলের উদ্যোগে এতিম-আলেমদের সম্মানে প্রথম রোজায় ইফতার সম্পূর্ণ হয়েছে। এ ছাড়া কূটনৈতিক এবং রাজনীতিবিদ ও পেশাজীবীদের নিয়ে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হবে।’

নয়া শতাব্দী/আরজে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ