ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

রমজান সামনে রেখে খাতুনগঞ্জে নিত্যপণ্যের মজুদ

প্রকাশনার সময়: ২৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭:০৪

চলতি বছরের মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে শুরু হতে পারে পবিত্র রমজান। আর এ রমজানকে সামনে রেখে বিশেষ প্রস্ততি নিয়েছে চট্টগ্রাম নগরের ভোগ্যপণ্যের বড় হাট- চাক্তাই খাতুনগঞ্জ বাজার। যেখানে পণ্য গুদামজাতের পাশাপাশি আমদানি করা হচ্ছে প্রচুর পরিমাণ মটর, ছোলা ও মসুর ডালের মত খাদ্যপণ্য। মূলত বাজার ধরতে ও রমজানে পণ্য মূল্য সহনীয় রাখতে এমন উদ্যোগ নিচ্ছেন এ বাজারের ব্যবসায়ীরা।

তবে, যেসব পণ্য আমদানি করা হবে, তা বুকিং থেকে শুরু করে গুদামে আসা পর্যন্ত দেড় থেকে দুই মাস সময় লেগে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, রমজান মাসকে সামনে রেখে এখন থেকে পণ্য গুদামজাত না করলে মার্কেট ধরা কঠিন হবে। ইতোমধ্যে প্রচুর পরিমাণ মটর, ছোলা ও মসুর ডাল আমদানি করা হয়েছে।

এছাড়া গত বছরের অনেক অবিক্রিত পণ্য গুদামে থেকে গেছে। ফলে সব মিলিয়ে রমজান মাসে নিত্যপণ্যের দাম সহনশীল পর্যায়ে থাকবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তবে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে আমদানি ব্যয়, তাই পণ্যের দাম গত বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি হতে পারে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

রমজানের নিত্যপণ্যের বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত বছর একই সময় অস্ট্রেলিয়ার ছোলার দাম ছিল কেজিপ্রতি ৯০ টাকা, যা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকায়। এদিকে গত বছর ভারতীয় ছোলার দাম ছিল কেজিপ্রতি ৯২ টাকা, যা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকা। এছাড়াও আগের বছর প্রতি মণ চিনি বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ১০০ টাকা দরে, এ বছর বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৯০০ টাকায়।

কেজিপ্রতি ৮২ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল মসুর ডাল, যা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা। গত বছর যে খেসারি ডালের দাম ছিল ৯০ টাকা, বর্তমানে তা ৯৮ টাকা কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে। মটর ডাল গত বছর বিক্রি হয়েছে ৫৫ টাকা, বর্তমানে ৬৫ টাকা। আগের বছর কেজিপ্রতি ৫২ টাকা দরে বিক্রি হওয়া সাদা মটর বিক্রি হচ্ছে ৬৪ টাকায়।

এছাড়াও মুগ ডাল গত বছর রমজানের আগে বিক্রি হয়েছে ৭২ টাকা, কিন্তু বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৩২ টাকা। প্রতি মণ (৩৭.৩২ কেজি) সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ৬ হাজার ৮০০ টাকা, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৮০০ টাকা। এছাড়া পাম তেল প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার ৩০০ টাকা, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৭৫০ টাকা। আগের বছর একই সময়ে পেঁয়াজের দাম ছিল ৪০ টাকা, তা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা। ১২০ টাকার রসুন বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২০৫ টাকা, চীনা আদা গত বছর ছিল ১৬০ টাকা, বর্তমানে ১৭০ টাকা এবং একবছর আগে মিয়ানমারের আদা বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকা, যা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়।

খাতুনগঞ্জের আড়তদাররা জানান, রমজানকে কেন্দ্র করে ভোগ্যপণ্যের আমদানি আগের চেয়ে বেড়েছে। ব্যবসায়ীদের দোকান ও গুদামে প্রচুর পরিমাণ পণ্য মজুদ রয়েছে। সাধারণত রমজান আসলে শরবতের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই চিনির ব্যবহারও বাড়ে কয়েক গুণ। বর্তমানে বাজারে চিনির কোনো ঘাটতি নেই। এছাড়া সারা দেশে প্রায় ৮০ হাজার টন ছোলার চাহিদা থাকে। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রচুর পরিমাণে ছোলা এসেছে।

এছাড়া এর বাইরে রমজানে সাদা মটর ও মসুর ডালেরও চাহিদা বেড়ে যায়। ভোজ্যতেল, চিড়া এবং খেজুরের চাহিদাও বৃদ্ধি পায়। সাধারণত খেজুর আমদানি হয় ইরান, তিউনিসিয়া, দুবাই ও সৌদি আরব থেকে।

চাক্তাই আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, রমজান উপলক্ষে ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীরা আমদানিকৃত পণ্য গুদামজাত শুরু করছেন। আমদানিকৃত পণ্য চট্টগ্রামের পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি করবেন ব্যবসায়ীরা। তবে এ বছর আমদানি ব্যয় বাড়ার কারণে কিছু কিছু পণ্যের দাম বেশি।

চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, গত তিন চার মাস আগে থেকে রমজানের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির জন্য এলসি (ঋণপত্র) খুলেন ব্যবসায়ীরা। ইতোমধ্যে সেইসব পণ্য গুদামজাত হচ্ছে। আমাদের দেশে প্রতি বছর ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বাড়ছে। আবার তার সাথে পাল্লা দিয়ে আমদানির পরিমাণও বাড়ছে। বর্তমানে যে পরিমাণ পণ্য আমদানির মাধ্যমে মজুদ করা হয়েছে, রমজানে পণ্যের দাম বাড়বে না।

নয়াশতাব্দী/ডিএ/একে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ