ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

রমজান ঘিরে বিপুল ভোগ্যপণ্য আমদানি

প্রকাশনার সময়: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:২৮

রমজান ঘিরে দেশে ভোগ্যপণ্যের আমদানি বাড়লেও বাড়তি দামে তা বিক্রি হচ্ছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে রমজানের পণ্য নিয়ে নোঙর করছে একের পর এক জাহাজ। এখন দেশের প্রধান এই সমুদ্রবন্দরে ভোজ্যতেল, ছোলা, ডাল, মটর, চিনি, খেজুরসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য বোঝাই ১১টি জাহাজ আছে। পথে আছে আরও তিনটি জাহাজ।

আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এসব জাহাজের নোঙর করার কথা রয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রমজানে ভোগ্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখতে এবার আগেভাগে তৎপর হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকও আগেভাগে তাদের তৎপরতা শুরু করেছে। রমজানের বহুল ব্যবহূত পণ্য ৯০ দিনের সাপ্লায়ার্স বা বায়ার্স ক্রেডিটের আওতায় আমদানি করার সুযোগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ফলে এখন বাকিতেও পণ্য আমদানি করা যাচ্ছে। কেউ চাইলে ন্যূনতম পেমেন্ট দিয়েও আনতে পারছে রমজানের পণ্য। আমদানিকারকরা আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বিশেষ এ সুবিধা পাবেন। ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার এবং আমদানিকারক সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, রমজানকে ঘিরে দেশে ইতোমধ্যে পর্যাপ্ত পণ্য এসেছে। এখনো রমজানের প্রায় এক মাস বাকি আছে। ভোগ্যপণ্য বোঝাই বেশ কিছু জাহাজ এখন বন্দরে আছে। পাইপলাইনে আছে আরও এক ডজনের বেশি জাহাজ। ভোগ্যপণ্যের ব্যাপক আমদানিতে আশা করা যায় এবারের রমজানে নিয়ন্ত্রণে থাকবে বাজার। ২০২৩ সালের ২ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৯০ দিনে ছোলা আমদানি হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার টন।

পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে প্রায় দুই লাখ দুই হাজার টন। অ্যাংকর ডাল এক লাখ ৮০ হাজার ও মসুর ডাল এসেছে এক লাখ ২২ হাজার টন। রমজান সামনে রেখে অপরিশোধিত চিনি এসেছে সাড়ে চার লাখ টন। একই সময় খেজুর এসেছে ২৭ হাজার টন। অপরিশোধিত সয়াবিন তেল দুই লাখ ৮০ হাজার ও পাম অয়েল এসেছে চার লাখ ৩০ হাজার টন।

৭ ফেব্রুয়ারি চিনি তৈরির ৫৮ হাজার ৯০০ টন কাঁচামাল নিয়ে বন্দরে নোঙর করেছে একটি জাহাজ। ২৯ হাজার ৯০০ টন ক্রুড সয়াবিন নিয়ে ৩০ জানুয়ারি এসেছে একটি জাহাজ। গম ও ডাল নিয়ে ৭ ফেব্রুয়ারি একটি জাহাজ এসেছে। একটি জাহাজ ১০ হাজার টন সয়াবিন নিয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি বন্দরে এসেছে। এ ছাড়া প্রায় চার লাখ টন গমবোঝাই আরও সাতটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করে আছে। তাছাড়া ৬০ হাজার ৫০০ টন সয়াবিন নিয়ে বন্দরে নোঙর করতে যাচ্ছে একটি জাহাজ। সাড়ে ৬০ হাজার টন চিনি তৈরির কাঁচামাল নিয়ে একটি এবং ৫৮ হাজার টন গম নিয়ে আরেকটি জাহাজও বন্দরে নোঙর করতে যাচ্ছে।

সূত্র জানায়, ভোগ্যপণ্যের ব্যাপক আমদানির উদ্যোগের পরও নিয়ন্ত্রণে আসেনি বাজার। আমদানিকারকদের মতে, ডলার সংকটের কারণে এলসি খুলতে গিয়ে অসুবিধা হচ্ছে। ন্যূনতম মার্জিনে এলসি খুলতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা থাকলেও তা মানছে না ব্যাংকগুলো। পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও মুনাফালোভীর পরিচয় দিচ্ছে। চট্টগ্রামের প্রধান পাইকারি মোকাম খাতুনগঞ্জে এবার আগেভাগেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। পর্যাপ্ত পণ্য মজুত থাকার পরও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে তেল, ছোলা, চিনিসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য।

এদিকে রমজানের বাজার প্রসঙ্গে এফবিসিসিআইর প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম জানান, রমজানকে সামনে রেখে এবার আগেভাগে কিছু সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ভোগ্যপণ্যের এলসি খুলতে ব্যবসায়ীরা যাতে কোনো অসুবিধায় না পড়েন, সেজন্য আগাম নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তারপরও ডলার নিয়ে কিছু ব্যাংক নিজস্ব নীতিতে চলছে। এটি আরও নিবিড়ভাবে মনিটর করা উচিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। তাহলে আমদানি পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হবে।

নয়া শতাব্দী/আরজে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ