রাশিয়ার দাগেস্তান প্রজাতন্ত্রে বিভিন্ন সিনাগগ ও চার্চে সন্ত্রাসী হামলার পর নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে এনে সাময়িকভাবে নিকাব নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বুধবার (৩ জুলাই) দাগেস্তানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ এই নির্দেশনা জারি করে। নিকাবের মাধ্যমে সাধারণত মুসলিম নারীরা চোখ ছাড়া পুরো শরীর ঢেকে রাখে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দাগেস্তান রিপাবলিকের ইসলামিক কর্তৃপক্ষ মুসলিম নারীদের নিকাব পরিধানের ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। গত মাসে অঞ্চলটিতে একটি সশস্ত্র হামলার পর এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
নিকাব হলো মুসলিম নারীদের একটি পোশাক যা তাদের পুরো মুখ ঢেকে রাখে শুধু চোখ ব্যতীত। মুসলিম ধর্মপণ্ডিতরা বলে থাকেন, এ ধরনের পোশাক নারীদের পর্দার অনুষঙ্গ। যদিও মুসলিম বিশ্বের সব জায়গায় তা মানা হয় না।
এক বিবৃতিতে দাগেস্তানের ডেপুটি হেড মুফতি আব্দুল্লাহ সালিমভ জানান, দাগেস্তান প্রজাতন্ত্রের জনগণের ওপর নিরাপত্তা হুমকি কমিয়ে আনার লক্ষ্যে রাশিয়ার জাতীয় নীতিমালা ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে দাগেস্তানের ধর্মীয় নেতারা নিকাব নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সালিমভ জানান, মুফতি কাউন্সিল এক জরুরি বার্তায় জানাচ্ছে যে- চলমান হুমকি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত দাগেস্তানে মুসলিম নারীদের সাময়িকভাবে নিকাব পরিধানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে একটি ফতোয়াও জারি করেছে স্থানীয় ইসলামি কর্তৃপক্ষ।
এর আগে মঙ্গলবার (২ জুলাই) ফতোয়া বিভাগের প্রধান আখমেদ-খাদজি ইসায়েভ জানান, মুসলিম নারীদের নিকাব পরার ব্যাপারে ইসলামী আলেমদের মধ্যে কোনো সাধারণ ঐকমত্য নেই। এ সময় বিভিন্ন ধর্মীয় ব্যাখ্যা ও ফতোয়ার আলোকে দাগেস্তানের মুফতিরা নিকাবের ওপর সর্বজনীন নিষেধাজ্ঞা দেয়ার মতো কোনো বিষয় খুঁজে পাননি বলেও জানান তিনি।
ইসায়েভ জানান, স্থানীয় পরিস্থিতির আলোকে নিকাবের ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দেয়া যেতে পারে। তবে স্থায়ীভাবে নিকাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ারও বিরোধিতা করেন ফতোয়া বিভাগের প্রধান। গত মাসের শেষের দিকে দাগেস্তানের গভর্নর সের্গেই মেলিকভ নিকাব নিষিদ্ধ করার পক্ষে কথা বলেছিলেন। এ সময় তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে, এ ধরনের পোশাক ককেশাসের জনগণের মধ্যে এতিহ্যগতভাবে প্রচলিত নয়। দাগেস্তান গভর্নর জানান, এ ধরনের পোশাক পুরুষদে লুকিয়ে থাকতে সাহায্য করে এবং নারীদের এর আড়ালে অবৈধ জিনিস বহনে সহযোগিতা করে।
গত ২৩ জুন দাগেস্তানে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর নেকাব নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। ওই দিন বেশ কয়েকজন বন্দুকধারী অর্থোডক্স গির্জা এবং একটি উপাসনালয়কে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। হামলায় নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যসহ অন্তত ২০ জন নিহত হন। আহত হন আরও অসংখ্য।
নয়াশতাব্দী/এনএইচ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ