ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কোরআন পোড়ানো সেই ব্যক্তি কি আদৌ মারা গেছেন?

প্রকাশনার সময়: ০২ এপ্রিল ২০২৪, ২১:৪৭ | আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২৪, ২৩:৪৩

সুইডেনে একাধিকবার পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় অভিযুক্ত সালওয়ান মোমিকা (৩৭) নামের ওই ইরাকি ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (২ মার্চ) সামাজিক মাধ্যম এক্সে রেডিও জেনোয়া নামে একটি পেজ থেকে দেওয়া এক পোস্টে বলা হয়, ‘ইরাকি উদ্বাস্তু এবং ইসলামিক সমালোচক সালওয়ান সাবাহ মাত্তি মোমিকার প্রাণহীন দেহ নরওয়েতে পাওয়া গেছে। যিনি প্রকাশ্যে বেশ কয়েকবার কোরআন পুড়িয়েছেন এবং সুইডেনে বিক্ষোভ সংগঠিত করার মূল কারিগর ছিলেন।’

রেডিও জেনোয়ার এই পোস্টের বরাত দিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম মোমিকার মৃত্যুর খবর প্রচার করে। মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে রেডিও জেনোয়ার বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মোমিকাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। ‘বাকস্বাধীনতা’ এবং প্রকাশ্যে কোরআন পোড়ানোর জন্য বিশ্বব্যাপী একইসঙ্গে খ্যাতি ও কুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন তিনি।

একই সোর্সের (রেডিও জেনোয়া) বরাত দিয়ে ইকোনোমিক টাইমস জানিয়েছে, ইরাকি উদ্বাস্তু এবং কোরআন সমালোচক সালওয়ান মোমিকাকে নরওয়েতে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। যার কর্মকাণ্ড মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং আশ্রয় অধিকার নিয়ে আন্তর্জাতিক বিতর্কের জন্ম দিয়ে বিশ্বব্যাপী উত্তাল সৃষ্টি করে। মোমিকার মৃত্যু একটি বিতর্কিত ব্যক্তিত্বের সমাপ্তি নিশ্চিত করেছে বলেও জানায় সংবাদমাধ্যমটি।

পোস্টের দু'ঘণ্টা পরে রেডিও জেনোয়া একটি সংশোধনী বার্তা দেয়। এক্স পোস্টে পেজটি জানায়, যারা মোমিকার মৃত্যুর বিষয়টি জানিয়ে এক্সে যে পোস্ট দিয়েছিল, সেই পোস্টটি তারা এখন মুছে দিয়েছে। বলা হয়, ‘যারা মোমিকার মৃত্যুর ঘোষণা দিয়েছিল, তারা সেই টুইটটি (১০ লাখেরও বেশি ইমপ্রেশনসহ) মুছে দিয়েছে। আমরা আরও নিশ্চিতকরণের জন্য অপেক্ষা করছি।’

এই বার্তার ১০ ঘণ্টা পার হলেও রেডিও জেনোয়া মোমিকার মৃত্যু নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো আপডেট দেয়নি। একইসঙ্গে নরওয়ে প্রশাসন এখনও সরকারিভাবে মৃত্যুর খবর জানায়নি। ফলে কোরআন পোড়ানো ব্যক্তি সালওয়ান মোমিকার আদৌ মৃত্যু হয়েছে কি না, তা নিয়েও থেকে যাচ্ছে প্রশ্ন।

প্রসঙ্গত, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মোমিকা উদার নাস্তিক সমালোচক এবং চিন্তাবিদ হিসাবে নিজেকে পরিচয় দিতেন। ২০২৩ সালের জুনে ঈদে সালওয়ান মোমিকা মুসলমানদের পবিত্র গ্রন্থ কুরআনের একটি অনুলিপিতে আগুন দিয়ে বিশ্বজুড়ে নিন্দার মুখে পড়েন।

পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনার পর সুইডেনের সঙ্গে ইরাকের সংঘাত চরমে ওঠে। পবিত্র ধর্মগ্রন্থের অবমাননায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে মুসলিম বিশ্ব। ইরাকের রাজধানী বাগদাদে অবস্থিত সুইডেনের দূতাবাসে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। সুইডেনের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে ইরাক। সেই সিদ্ধান্তে সমর্থন জানিয়েছিল ইরান, তুরস্ক, কাতার, সৌদি আরবের মতো দেশগুলো। সুইডেনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারে তারাও, এমন সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছিল।

‌এমন পরিস্থিতিতে মোমিকাকে আশ্রয় দিতে চায়নি সুইডেন। ইরাক থেকে বিতাড়িত মোমিকাকে ২০২১ সালে আশ্রয় দিলেও সেই সিদ্ধান্ত পাল্টে ফেলে সুইডিশ প্রশাসন। ফলে নরওয়েতে চলে যান মোমিকা।

নয়াশতাব্দী/ডিএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ