ঢাকা, শনিবার, ৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

তীব্র গরমে নাকাল শিশুরা, হাসপাতালে শয্যা সংকট

প্রকাশনার সময়: ২২ এপ্রিল ২০২৪, ১৮:২৪

বৈশাখের শুরুতেই তীব্র গরমে রাজধানীর শিশু হাসপাতালে প্রতিদিনই বাড়ছে রোগী। ডায়রিয়া নিউমোনিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে শয্যা সংকট। গরমে সুস্থ থাকতে প্রচুর পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি ও তরল খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

এদিকে আগামী তিনদিনের জন্য ফের ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি করেছে আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ এক সতর্কবার্তায় বলেন, দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ সোমবার (২২ এপ্রিল) থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বাড়তে পারে।

এর আগে গত ১৯ এপ্রিল তিনদিনের জন্য হিট অ্যালার্ট দিয়েছিল আবহাওয়া অফিস। সে সময় তাপমাত্রা আরও বাড়ার শঙ্কাও করা হয়েছিল।

তীব্র তাপপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন বয়স্ক, অসুস্থ এবং শিশুরা। তীব্র গরমে রাজধানীর শিশু হাসপাতালে প্রতিদিন বেড়েই চলছে রোগীর চাপ। ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, ঠান্ডা কাশি, জ্বর, অ্যাজমাসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। রোগীর চাপ বাড়ার কারণে রাজধানীর শিশু হাসপাতালে শয্যা সংকট দেখা দিয়েছে।

সোমবার (২২ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁও শিশু হাসপাতালে ঘুরে এবং হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় আউটডোরে ৩২ জন নিউমোনিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে। এখনো ভর্তি আছে ৮৭ জন। চলতি বছরে মোট ভর্তি রোগী এক হাজার ৮৯৮ জন।

সাধারণ জ্বরে ২৪ ঘণ্টায় আউটডোরে ১৮৯ জন চিকিৎসা নিয়েছে। অ্যাজমায় ২৩ জন, স্ক্যাবিস এবং স্কিন ডিজিজে ৬৬ জন এবং ১০৯ জন চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন।

এছাড়াও ডায়রিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় আউটডোরে ৫৩ জন চিকিৎসা নিয়েছে, একজন নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, বর্তমানে ভর্তি আছেন পাঁচজন। চলতি বছরে মোট ডায়রিয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে মোট ৩৮০ জন।

পাশাপাশি ঢাকা শিশু হাসপাতালে আউটডোরে ইমার্জেন্সিতে ২৪৮ জন রোগী, মেডিসিন বিভাগে ৬৮১ জন এবং সার্জারি বিভাগে ১৬৪ জনসহ মোট এক হাজার ৯৩ জন চিকিৎসা নিয়েছে।

গরমে সুস্থ থাকতে প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি ও তরল খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। পাশাপাশি বাইরের খোলা খাবার শরবত খাওয়া থেকে বিরত থাকতে এবং প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়া এবং প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি ও তরল খাবার খাওয়ার পরামর্শও দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

শিশু হাসপাতালে একজন চিকিৎসক বলেন, হাসপাতালের বেশিরভাগ সিট ভর্তি হয়ে গেছে। খুব ইমার্জেন্সি কিছু রোগী ভর্তি নিতেই হচ্ছে। যারা গরিব তাদের জন্য আমরা কিছু ব্যবস্থা করছি। অন্যদিকে আর্থিক অবস্থা যাদের ভালো তাদের অন্য কোনো হাসপাতালে রেফার করে দিচ্ছি।

এমন তীব্র গরমে শিশুদের যত্নের বিষয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালে পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শিশুদের বাইরে রোদে যাওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে। ঠান্ডা ছায়াযুক্ত স্থানে রাখতে হবে, পাতলা সাদা সুতি কাপড় বা খালি গায়ে রাখতে হবে। প্রচুর পরিমাণে পানি ও ফলের শরবত খাওয়ানো যেতে পারে।

তিনি বলেন, এ গরমে ঘরের দরজা জানালা খোলা রাখতে হবে। বেশিক্ষণ কোনো বাবা মা যেন খোলা জায়গায় খাবার না রাখে, ফ্রিজ থাকলে ফ্রিজে খাবার সংরক্ষণ করতে হবে। ফ্রিজ থেকে বের করে সেটা আবার গরম করে খাওয়াতে হবে। শিশুদের শরীরের ঘাম মুছে দিতে হবে। প্রয়োজনে দিনে কয়েকবার গোসল করানো যেতে পারে। ঠান্ডা ফ্রিজের পানি বা আইসক্রিম খাওয়া থেকে বাচ্চাদের এ সময় বিরত রাখতে হবে।

বাচ্চারা বাইরে গেলে যেন সাদা সুতি ঢিলেঢালা পোশাক পরে যায়। পাশাপাশি সঙ্গে ছাতা এবং পানি রাখে। রাস্তার খোলা কোনো খাবার, শরবত বা পানি না খাওয়ারও পরামর্শ দেন তিনি।

নয়াশতাব্দী/টিএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ