ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজে এক তরুণী চিকিৎসককে হাসপাতালের ভেতরেই ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল দেশটি।
এ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার (১৪ আগস্ট) রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে কলকাতাসহ রাজ্যের বিভিন্ন রাজপথে নারীরা নেমে আসেন `রাত দখল করো'— এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে। পরের দিনেও অনেকে আরজি কর হাসপাতালে গিয়েছিলেন প্রতিবাদ জানাতে। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন টালিউড অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। সেখানে গিয়ে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তোলেন।
ভারতীয় গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ অভিনেত্রী বলেন, `আরে ধনধান্যে পুষ্পে ভরা, আপনি ছাড়ুন তো (মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি) দিদি। আপনি অনেক নাটক করেন। আপনি ওই সিরিয়ালে, ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে সাদা পোশাক পরে চশমা পরে গিয়ে বসে থাকেন। অনেক নাটক করেছেন। আমি জানি এরপরে আপনারা আমার আরও খারাপ অবস্থা করবেন। এমনিতেই করেছেন। আরও করবেন আমি জানি। কিন্তু সবাইকে আপনি কিনতে পারেননি। আর তাদের মধ্যে একজন শ্রীলেখা মিত্র। সরি।'
এরপরই অভিনেত্রীকে কন্যাশ্রী প্রকল্প, পুজোয় ক্লাবকে অনুদান দেওয়া নিয়েও প্রশ্ন করা হলে শ্রীলেখা বলেন, `এ যে কন্যাশ্রী প্রকল্পের যে টাকাটা দিচ্ছেন, এ যে ৮৫ হাজার টাকা ক্লাবে দিচ্ছেন মাটির দুর্গাপুজো করার জন্য আর এখানকার মেয়েরা, ওরা কেউ দুর্গা সেটা বলছি না। সাধারণ মেয়ে। সাধারণ মেয়ে একজন, তার কোনও নিরাপত্তা নেই।'
অভিনেত্রীর ভাষ্য, `তার আরেকটা বাড়ি হল তার ওয়ার্ড যেখানে সে কাজ করছে সেখানে তার কোনও নিরাপত্তা নেই। আপনি কি কন্যাশ্রী করছেন? ওই টাকায় হাসপাতালগুলোকে উন্নত করুন না। আসল অপরাধীদের ধরুন না, নিজের দলের হলেও একটা উদাহরণ তৈরি করুন না।'
নারী চিকিৎসকের পরিবারকে মুখ্যমন্ত্রী যে টাকা দিতে চেয়েছেন সেটা নিয়ে শ্রীলেখা বলেন, `আর আপনারা কে যে ঠিক করছেন একজন বাবা মায়ের কাছে তাদের মেয়ের দাম দশ লাখ টাকা! টাকা দিলেই হয়ে গেল দিদি? বাবা মায়েরা শান্ত হয়ে যাবেন?'
উল্লেখ্য, গত ৯ আগস্ট ভোরের দিকে কলকাতার শ্যামবাজার এলাকায় অবস্থিত আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের বিশ্রামকক্ষ থেকে এক নারী চিকিৎসকের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার হয়। পরে ময়নাতদন্তে জানা যায়, ওই চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছিল।
তবে মরদেহ উদ্ধারের পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছিল যে ওই চিকিৎসক আত্মহত্যা করেছেন। কর্তৃপক্ষের এ বক্তব্যের পর প্রথমে ফুঁসে ওঠে কলকাতা, পরে গর্জে ওঠে পুরো পশ্চিমবঙ্গ।
নয়াশতাব্দী/জিএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ