ঢাকা, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বুয়েটে সৃষ্টিশীল ছাত্ররাজনীতি চালু হবে : সাদ্দাম

প্রকাশনার সময়: ০২ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:০০

বুয়েটে সৃষ্টিশীল ছাত্ররাজনীতি চালু হবে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।

তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের অবৈধ আদেশ হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করলে, মহামান্য আদালত তা বাতিল করে দেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বুয়েটের শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানাচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী আধুনিক, স্মার্ট ও পলিসি নির্ভর নিয়মতান্ত্রিক ছাত্ররাজনীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এবং উদ্ভূত পরিস্থিতির ওপর আলোকপাতের উদ্দেশ্যে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

সাদ্দাম বলেন, বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি পুনরায় শুরু হবে। কিন্তু সেটি কোন ছাত্ররাজনীতি তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। এই রাজনীতি অবশ্যই ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ, সেশনজট, র্যাগিং-বুলিং, দখল-বাণিজ্য, হত্যা-সন্ত্রাসের ছাত্ররাজনীতি নয়। এই ছাত্ররাজনীতি হবে আধুনিক, যুগোপযোগী, বৈচিত্র্যময়-সৃষ্টিশীল, জ্ঞান-যুক্তি-তথ্য-তত্ত্বনির্ভর।

তিনি বলেন, বুয়েটের শিক্ষার্থীরা নিজেরাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের নেতৃত্ব নির্বাচন করবে। যে নেতৃত্ব হবে আদর্শিক এবং যে নেতৃত্ব বুয়েটের শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকেই তৈরি করবে বিশ্বসেরা উদ্ভাবক, উদ্যোক্তা। বুয়েটে আগামী দিনে এমন ছাত্ররাজনীতি পরিচালিত হবে যা প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বুয়েট শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার নামে ব্রেইন চেইন বন্ধ করবে।

তিনি আরও বলেন, বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি ফিরিয়ে এনেই কেবল বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তার দায়িত্ব শেষ করবে না। দেশরত্ন শেখ হাসিনার পরিকল্পিত আগামী দিনের উন্নত, স্মার্ট বাংলাদেশে উন্নত ও স্মার্ট ছাত্ররাজনীতি উপহার দেওয়ার জন্য মডেল প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বুয়েটকে গ্রহণ করবে। এই ঐতিহাসিক যাত্রায় বুয়েটের সব শিক্ষার্থীকে সহযোগিতার সংকল্প নিয়ে পাশে থাকার আহ্বান জানাচ্ছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলীর উপর আপনারা সম্পূর্ণরূপে ওয়াকিবহাল। ৭ অক্টোবর ২০১৯ বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তার নৈতিক ও সাংগঠনিক অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে। ছাত্ররাজনীতির নামে এমনকি ছাত্রলীগের দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে জিয়া-এরশাদ-খালেদা-নিজামী প্রবর্তিত হত্যা-খুন-সন্ত্রাস পরিচালনা করা যে কোনোমতেই সম্ভব নয়, সেটি এই হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রমাণ করেছে। বাংলাদেশের ছাত্রসমাজের সবচেয়ে কাছের বন্ধু দেশরত্ন শেখ হাসিনা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করেছেন, আবরারের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, প্রশাসন বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অতীতেও সমর্থন করেনি, বর্তমানেও করে না।

সাদ্দাম বলেন, শেখ হাসিনার পরিকল্পিত উন্নত-আধুনিক বাংলাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সর্বোপরি আমাদের সামগ্রিক ছাত্ররাজনীতি কোনোভাবেই পশ্চাৎপদ ধারায় পরিচালিত হতে পারে না। আধুনিক নিয়মতান্ত্রিক ধারার ছাত্ররাজনীতির সূচনা যে দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বুয়েট থেকেই শুরু হতে যাচ্ছে, বুয়েটের শিক্ষার্থীরাই যে সমগ্র ছাত্ররাজনীতিকে বদলে যাবার পথ দেখাতে যাচ্ছে, আজ সেই শুভ উপলক্ষের উদ্বোধন। উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে এবং বিশ্বের সর্বোচ্চ র্যাংকিংধারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্ররাজনীতি কীভাবে পরিচালনা হয় তা থেকে আইডিয়া নিয়ে, নিজেদের চর্চায় সেটি নিয়ে বুয়েট আমাদের ছাত্ররাজনীতিকে পথ নির্দেশ করবে।

এ সময় তিনি বুয়েটে কিছু কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্সূচীগুলো হলো-

১. ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বীর আবাসিক হল ফিরিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে বুয়েট শহীদ মিনারে অবস্থান;

২. আধুনিক, স্মার্ট, পলিসি নির্ভর নিয়মতান্ত্রিক ছাত্ররাজনীতি প্রতিষ্ঠার কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণে বুয়েট শিক্ষার্থীদের সাথে মতামত আহ্বান ও আলোচনা।

৩. সাম্প্রদায়িক-মৌলবাদী-জঙ্গি কালোছায়া থেকে বুয়েটকে মুক্ত করতে সেমিনার ও সাংস্কৃতিক উৎসব আয়োজন

৪. বুয়েটে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

নয়াশতাব্দী/একে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ