‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিকল্প বাংলাদেশে তৈরি হয়নি, আর হবেও না’ বলে মন্তব্য করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আয়োজনে ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় এ মন্তব্য করেন জবি উপাচার্য।

রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে এ প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইতে কয়েকটি দর্শন রয়েছে। এই দর্শনটাকে যদি আমরা অনুধাবন করতে পারি, তাহলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে আমরা অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো। এই বইটির বিভিন্ন ডাইমেনশন রয়েছে। সেটা হচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যখন তরুণ ছিলেন, তার জীবনটা কেমন ছিলো। তার আগে কিশোর থেকে তরুণ হয়ে ওঠা, তার বিয়ে, ধর্মের সঙ্গে সম্পর্ক, টুঙ্গীপাড়ায় পাড়াপড়শির সঙ্গে কি সম্পর্ক, অন্যান্য ধর্মালম্বী মানুষের সঙ্গে কি সম্পর্ক, তার সবই রয়েছে এই বইতে। এমন একজন যোগ্য রাজনীতিবিদ হওয়ার পথটা যে ফুলশয্যা ছিল না, সেটার একটা প্রতিফলন অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে রয়েছে।

এসময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমার আহ্বান থাকবে শিক্ষার্থীরা যেন বইটির দার্শনিক মনোভাব আত্মস্ত করতে পারে।

বর্তমান সময়ে ছাত্রলীগের জ্ঞানের পরিধি বাড়ছে উল্লেখ করে অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, রাজনীতি থাকবে, কিন্তু সেটা হিংসা-বিদ্বেষ, সংঘাত, সহিংসতা মুক্ত হতে হবে। আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে, আমরা যদি কলম নিয়ে যুদ্ধ করতে পারি, তাহলে ভালো প্রার্থী ও বিতার্কিক হতে পারবো। আর সেটার মাধ্যমে আমরা প্রতিপক্ষকে বোঝাতে সক্ষম হবো।

আমি নিজেই যদি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করি, তাহলে আমার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমার দূরত্ব তৈরি হবে মন্তব্য করে সাদেকা হালিম বলেন, আমি বিশ্বাস করি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমার সন্তান তুল্য। তারাই আমার খেয়াল রাখবে। তাই আমার কোনো প্রটোকল লাগবে না।

এসময় মেয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা সঙ্গী হিসেবে সারাজীবন বঙ্গবন্ধুকে সাহায্য-সহযোগিতা করেছিলেন বলেই, শেখ মুজিবুর রহমান বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠতে পেরেছিলেন। তিনি সর্বদা নারীদের সম্মান করতেন। জাতির পিতা মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত নারীদের বীরাঙ্গনা উপাধি দেন। আমাদের মেয়েদের সম্মান করতে হবে।

তিনি বলেন, সংবিধানের যে ৪টি স্তম্ভ রয়েছে- গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা। সমাজতন্ত্রের বীজ হচ্ছে ইকুয়ালিটি অ্যান্ড ইকুইটি। অর্থাৎ সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের অধিকার দিতে হবে। আমরা কোয়ালিটির দিকে যাই কিন্তু কোয়ানটিটির দিকে লক্ষ্য করি না।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মো. ইব্রাহিম ফরাজির সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীর চৌধুরী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক এসএম আকতার হোসাইন।

এসময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ কর্মীদের মাঝে তুলে দেওয়া হয়।

নয়াশতাব্দী/টিএ/এনএস