ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

নতুন রোডম্যাপও ব্যর্থ

প্রকাশনার সময়: ০১ মে ২০২৪, ০৮:১৬

অর্থনীতিবিদদের প্রবল বিরোধিতার পরও রাজনৈতিক বিবেচনায় নতুন ব্যাংকের অনুমোদন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে এ ব্যাংকগুলো ভালো করতে পারেনি। এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় বিপদেই আছে তারা। ফলে সবলের সঙ্গে দুর্বলকে একীভূত করে ব্যাংক কমানোর পদক্ষেপ নেয় সরকার। এছাড়া অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে এক ধরনের দুরবস্থার মধ্যে পড়েছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাত। এর থেকে উত্তরণে নতুন করে পথ খুঁজছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। ঘোষণা করেছে ১৭ দফা রোডম্যাপ বা পথনকশা।

দেশের ব্যাংক খাতের পুরোনো রোগগুলো সারিয়ে তুলতে এই রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়। স্বীকার করা হয়েছে, আর্থিক খাতের দুর্বলতার নানা বিষয়। পথনকশায় বছরের পর বছর ধরে চলা ব্যাংক খাতে যেসব সংস্কারের পরামর্শ দেয়া হয়েছিল, তা অনেকটাই স্থান পেয়েছে।

তবে ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে নতুন এই রোডম্যাপ কাজে আসবে না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলেছেন, এর আগেও এরকম রোডম্যাপ ছিল। আগের রোডম্যাপ থেকে কেন সরে এলাম— তা না জেনে নতুন রোডম্যাপ করে কোনো কাজে আসবে না।

গত ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে এবং সুশাসন নিশ্চিত করতে ১৭ দফা রোডম্যাপ অনুমোদন দেয়া হয়। তারপর এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের। তার আগে পথনকশা নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের সম্মতিও নেয়া হয়।

পথনকশায় যে ১৭টি বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, এর মধ্যে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ। সেগুলো হলো- খেলাপি ঋণ কমানো, বেনামি ঋণ ও জালিয়াতি বন্ধ করা, যোগ্য পরিচালক নিয়োগে ব্যবস্থা, উপযুক্ত স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ এবং দুর্বল ব্যাংককে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করা, যাকে মার্জার বলা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, তাদের লক্ষ্য তিনটি— ১. ব্যাংকের সার্বিক খেলাপি ঋণ ৮ শতাংশের নিচে নামানো, যা এখন ১০ শতাংশের একটু কম। ২. রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ১০ এবং বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা, যা এখন যথাক্রমে প্রায় ২২ ও ৭ শতাংশ। ৩. ব্যাংক খাতে সুশাসন নিশ্চিতের জন্য সীমার বাইরে দেয়া ঋণ, বেনামি স্বার্থসংশ্লিষ্ট ঋণ এবং জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে ঋণ বিতরণ শূন্যে নামিয়ে আনা। বাংলাদেশ ব্যাংক এসব লক্ষ্য পূরণের সময়সীমা ঠিক করেছে ২০২৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। সংবাদ সম্মেলনে ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের বলেন, এই পথনকশা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

যারা দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংক খাতে সুশাসনের অভাব নিয়ে কথা বলেছেন, তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের এই পথনকশাকে স্বাগত জানিয়েছেন। পাশাপাশি সন্দেহও প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, ব্যাংকের রোগ সারাতে ব্যবস্থা নিতে হবে সরকার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ ব্যাংক সেটা কতটা পারবে, তা আগামী দিনগুলোতে দেখা যাবে। জানা গেছে, ২০০৯ সালে খেলাপি ঋণ ছিল সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকার মতো, যা এখন ১ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। অবশ্য ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন, প্রকৃত খেলাপি ঋণ চার লাখ কোটি টাকার বেশি। মহামারির পর ইউক্রেন যুদ্ধ দেশের অর্থনীতিকে যে সংকটে ফেলেছে, তা থেকে বেরিয়ে আসতে ব্যাংক খাতের বড় সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করেছেন অর্থনীতিবিদরা। আওয়ামী লীগের এবারের নির্বাচনি ইশতেহারেও আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও অপরাধ দমন, খেলাপি ঋণ বারবার পুনঃতফসিল করে ঋণ নেয়ার সুযোগ নিয়ন্ত্রণ ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে প্রভাবমুক্ত রাখার কথা বলা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় এলো বাংলাদেশ ব্যাংকের রোডম্যাপ। রোডম্যাপ বা পথনকশায় খেলাপি ঋণ কমাতে বেশ কিছু কর্মপরিকল্পনার কথা বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর একটি হলো- খেলাপি ঋণ অবলোপন, অর্থাৎ ব্যাংকের স্থিতিপত্র থেকে বাদ দেয়া সংক্রান্ত। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, কোনো ঋণ একাধারে দুই বছর মন্দ বা ক্ষতিজনক (খেলাপি) থাকলে সে সব ঋণের বিপরীতে শতভাগ নিরাপত্তা সঞ্চিতি রেখে তা অবলোপন করতে হবে।

ব্যাংক তার মুনাফা থেকে খেলাপি ঋণের সমপরিমাণ অর্থ রেখে দেয়, যা নিরাপত্তা সঞ্চিতি নামে পরিচিত। বাংলাদেশ ব্যাংক আরও বলছে, কোনো ঋণ টানা তিন বছর খেলাপি থাকলে তা অবলোপন করতে হয়। অবলোপন নীতি বাস্তবায়নের ফলে কত টাকা খেলাপি কমবে, তাও জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাদের হিসাবে, দুই বছর খেলাপি থাকা ঋণ অবলোপন করলে সার্বিক খেলাপি ঋণ কমবে ৪৩ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি, যা ব্যাংকের মোট ঋণের ২ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, শতভাগ নিরাপত্তা সঞ্চিতিতে ব্যাংকের বাড়তি কোনো ঝুঁকি তৈরি হবে না। অবলোপন করা ঋণ আদায়ের জন্য ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহীর সরাসরি তত্ত্বাবধানে ‘অবলোপনকৃত ঋণ আদায় ইউনিট’ নামে একটি আলাদা ইউনিট গঠনের কথা বলা হয়েছে পথনকশায়। এই ঋণ আদায়ের লক্ষ্য অর্জন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের পারদর্শিতা মূল্যায়নে যুক্ত করা হবে। অবলোপন মানে খেলাপি ঋণ আদায় নয়। ব্যবসায়ীরা টাকা না দিলে খেলাপি ঋণের পেছনে ব্যয় করতে হবে ব্যাংকের মুনাফা থেকে, যা আসলে শেয়ারধারীদের প্রাপ্য। কার্যত খেলাপি ঋণ আদায় না করে অবলোপন করা হলে লোকসান হবে শেয়ারধারীদের। এদিকে বেসরকারি খাতে সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি প্রতিষ্ঠায় আইন প্রণয়নের কথাও বলা হয় পথনকশায়। আরও বলা হয়, মন্দ ঋণ ও অবলোপন করা সেই কোম্পানির কাছে বিক্রি করে ব্যাংকগুলো তাদের আর্থিক স্থিতিপত্র পরিষ্কার করতে পারবে। বিক্রির মাধ্যমে পাওয়া টাকা ব্যাংক আয় হিসেবে দেখাতে পারবে। ঋণ পরিশোধের জন্য দেয়া বাড়তি মেয়াদ আর বাড়ানো হবে না বলেও জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি মনে করে, এতে ব্যাংকের তারল্য সংকট কমবে। পাশাপাশি ব্যাংকের মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের সংজ্ঞায় পরিবর্তন আনা হবে। ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রয়োজনীয় নীতিমালা তৈরি ও বাস্তবায়নের কথাও বলা হয়েছে পথনকশায়। এতে আরও বলা হয়, খেলাপি ঋণ আদায় করা কর্মকর্তাদের জন্য বিশেষ ভাতা চালু হবে। ঋণের জামানত বাধ্যতামূলকভাবে তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে দিয়ে মূল্যায়ন করাতে হবে।

ব্যাংকিং খাতের সুশাসন নিশ্চিতে ছয় পরিকল্পনার কথা বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে ব্যাংকের শেয়ারধারী পরিচালকদের যোগ্যতা ও দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কিত নীতিমালা সংশোধন করা এবং স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ, তাদের সম্মানী নির্ধারণ ও দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কিত নীতিমালা প্রণয়ন করার কথা বলা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নিয়োগ ও পুনঃনিয়োগে বাছাই প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা আরও কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। পারফরম্যান্স বা পারদর্শিতার সূচকের ভিত্তিতে এমডিদের কাজের মূল্যায়ন করা হবে।

পথনকশায় ব্যাংক একীভূত করার বিষয়টি উল্লেখ করে বলা হয়েছে, একীভূত হওয়ার তিন বছর পর্যন্ত কাউকে চাকরিচ্যুত করা যাবে না। ব্যাংকে পেশাদারদের নিয়োগে একাধিক পদক্ষেপের কথাও বলা হয়েছে।

রোডম্যাপে পরিষ্কার করে বলা হয়েছে, যে ব্যাংকগুলোর অবস্থা খারাপ সেগুলোকে ভালো ব্যাংকগুলোর সঙ্গে একীভূত করা হবে। কিন্তু সেটা কতটুকু সম্ভব হবে, তা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠেছে। কোন ব্যাংক দুর্বল, কোন ব্যাংক সবল, তা নির্ধারণ কীভাবে হবে, সেটাই বড় প্রশ্ন। সংবাদ সম্মেলনে ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের বলেন, ব্যাংকগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের আর্থিক সূচক পরীক্ষা করতে বলা হয়েছে। কোন ব্যাংক কী পর্যায়ে আছে, তারা নিজেরাই বুঝতে পারবে।

প্রশ্ন হলো, অনিয়ম গোপন করে আসা কিছু ব্যাংক নিজেদের দুর্বল দেখাবে কিনা— এ বিষয়ে সাবেক অর্থ উপদেষ্টা এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, বেশিরভাগ ব্যাংক নিজেদের আর্থিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে যে তথ্য দিচ্ছে, তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। এ জন্য সন্দেহের তালিকায় থাকা দুর্বল ব্যাংকগুলোতে স্বাধীনভাবে বিশেষ নিরীক্ষা চালাতে হবে। তার আগে এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিতে হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রোডম্যাপকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, ভালো দিক হচ্ছে, বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংক খাতের দুরবস্থার বিষয়টি স্বীকার করেছে; বুঝতে পেরেছে। সে জন্যই কিন্তু ১৭ দফা রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সংস্কার কাজটি কঠিনভাবে করতে হবে। নরম সুরে কাজ হবে না। তবে সংস্কারের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সদিচ্ছা কতটা থাকবে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি সরকার বা রাজনৈতিক চাপ উপেক্ষা করে স্বাধীনভাবে তার স্বায়ত্তশাসন প্রয়োগ করে এই রোডম্যাপ বাস্তবায়ন করতে পারে, তাহলে অবশ্যই ভালো ফল পাওয়া যাবে। নতুন রোডম্যাপের সফলতা নিয়ে গত ১০ ফেব্রুয়ারি এক আলোচনায় সংশয় প্রকাশ করেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, সংস্কারে ব্যর্থতায় ব্যাংকিং খাত আজ বিপর্যস্ত। বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং সংস্কারের রোডম্যাপ নতুন কিছু নয়, তবে এটি বাস্তবায়নে ব্যর্থতা এই খাতকে ব্যথিত করেছে। তিনি বলেন, আমি এর আগে দুটি ব্যাংকিং সংস্কারের সঙ্গে জড়িত ছিলাম, তাই আমি সেগুলো এবং বাস্তবায়ন সম্পর্কে অবগত। প্রভাবশালী গোষ্ঠী ব্যাংকিং আইনে এর অন্তর্ভুক্তি রোধ করেছে। পূর্ববর্তী প্রবিধানে কী অভাব ছিল তা আমরা জানি না, তখন বাস্তবায়ন করা কঠিন ছিল। নতুন রোডম্যাপ বাস্তবায়ন সহজ হবে, এটা আমি মনে করি না। তিনি আরও বলেন, স্পন্সর ডিরেক্টররা (উদ্যোক্তা পরিচালক) অনেক শক্তিশালী হয়। স্পন্সর ডিরেক্টর কী পরিমাণ ঋণ নিতে পারবে, এক পরিবার থেকে কতজন পরিচালক থাকবে এবং তাদের মেয়াদে কত বছর হবে, সে সম্পর্কে জানতে হবে। কারণ, এসব বিষয়ে বিস্তারিত না জানলে বোঝা যাবে না।

নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, প্রথম ব্যাংক রিফর্মস কমিটি গঠন করা হয় ১৯৯৭ সালে। তখন ব্যাংক মালিকদের সঙ্গে একটি মিটিং করেছিলাম। সেই সময় তারা নিজেদের ব্যাংক থেকে ৩০ শতাংশের বেশি ঋণ নিয়েছিল। এসব ঋণের অধিকাংশ ছিল খেলাপি। তখন এসব ব্যাংক মালিক বলেছিলেন-অনেক কষ্ট করে ও অর্থ ব্যয় করে ব্যাংক চালু করেছি, এখন আমরা ঋণ নিতেও পারব না? সেখান থেকে ব্যাংক খাত বেরিয়ে আসতে পেরেছে। এখন ৩ শতাংশ ঋণ নিতে পারছেন ব্যাংক মালিকরা। তাও দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন ব্যাংক মিলিয়ে ৩০ শতাংশ ঋণ নিচ্ছে। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার বিষয়ে তিনি বলেন, দুর্বল ব্যাংকগুলোর দায় বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক নেবে না। যদি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ওপর দায় চাপিয়ে দেয়া হয়, সেটি সম্ভব হতে পারে। খেলাপি ঋণ ব্যাংক খাতের প্রধান সমস্যা— উল্লেখ করে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ব্যাংক খাতে আগে ঋণ অবলোপন করা হতো তিন বছরে। এখন সময় আরও কমিয়ে দুই বছর করা হয়েছে। সুযোগ থাকলে ৬ মাসের মধ্যে ঋণ অবলোপন করে ফেলবে। কারণ অবলোপন করলে ব্যালেন্স শিট থেকে ৪৩ হাজার কোটি টাকা বের হয়ে যাবে। তখন ব্যালেন্স শিট দেখতে একটু ভালো দেখাবে। এ জন্য এরকম সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে খেলাপি হলে তিনি নানা প্রতিবন্ধকতায় পড়ে যান। ঋণখেলাপি বাড়ি ভাড়া নিতে পারেন না, ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে পারেন না, সামাজিকভাবেও নানা প্রতিবন্ধকতা থাকে। আর আমাদের এখানে ঋণখেলাপিরা মহাআনন্দে থাকেন। বিশ্ব ব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সুপারিশ অনুসরণ করা সব সময় বুদ্ধিমানের কাজ নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। কারণ বাংলাদেশের পরিস্থিতি অন্যান্য দেশের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন বলে মনে করেন তিনি।

নয়াশতাব্দী/ডিএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ