ঢাকা, রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ কার্তিক ১৪৩১, ৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নববধু আইরিনকে পৃথিবী ছাড়তে হলো যৌতুকের এক ভড়ি স্বর্ণের জন্য!

প্রকাশনার সময়: ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ২০:৫৫

আট নয় মাস পূর্বে ঘটা করে বিয়ে হয় আইরিন খাতুন ও খায়রুল ইসলামের। বিয়েতে মেয়ের সুখের কথা ভেবে নিন্ম আয়ের কৃষক বাবা আজাদুল ইসলাম যৌতুক হিসেবে জামাইকে নগদ ১ লাখ টাকা, স্বর্ণের আংটি, সাধ্যমত তৈজষপত্র, আসবাব, সাংসারিক জিনিসপত্রসহ সাড়ে তিন লাখ টাকার মত খরচও করেন। কিন্তু নানা খরচ এবং স্বর্ণের অস্বাভাবিক দাম বাড়ায় বিয়ের সময় মেটানো শর্তের এক ভড়ি ওজনের স্বণালংকার আর পরিশোধ করতে পারেনি এ অসহায় বাবা। আর এ বকেয়া স্বর্ণালংকারের জন্যই বিয়ের দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে স্বামী ও ওই পরিবারে লোক জনের শারিরিক এবং মানুষিক নির্যাতনের শিকার হতে থাকেন আইরিন খাতুন।

পরবর্তী‌তে নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে কীটনাশক পান করে অকালে প্রান দিতে হয়েছে এ নববধুকে। বিষয়টি নিশ্চিত করে তাড়াশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন।

মঙ্গলবার (২৯ অ‌ক্টোবর) গভীর রাতে এ ঘটনা‌টি ঘ‌টে, সিরাজগঞ্জের তাড়াশে তাড়াশ পৌর এলাকার ভাদাস পশ্চিম পাড়া মহল্লায়। নিহত নববধু আইরিন ওই মহল্লার মৃত দবির উদ্দিনের ছেলে খাইরুল ইসলামের স্ত্রী ও পৌর এলাকার জাহাঙ্গীরগাঁতি মহল্লার আজাদুল ইসলামের মেয়ে।

তাড়াশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন জানান, কীটনাশক পানে নিহত আইরিনের মরদেহ আজ বুধবার সকাল ১০ টার দিকে তার স্বামীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। আর দুপুরের দিকে তার মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে।

পুলিশ ও নববধু আইরিনের পরিবার সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে বকেয়া এক ভড়ি স্বর্ণালংকারের জন্য আইরিনের স্বামী খাইরুল স্ত্রীর সাথে বাক-বিতন্ডায় জড়ান। বিষয়টি আইরিন ওই রাতেই ফোনে তার বাবাকে জানান। তখন বাবা আজাদুল জমি বন্ধক রেখে সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই স্বণালংকার তৈরি করে দেবার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু এ কথা শুনে স্বামী খাইরুল রেগে গিয়ে স্ত্রীকে বেদম মারপিট করে। পরবর্তী‌তে স্ত্রীকে রেখে ‌সে অন্যত্র ঘুমাতে চলে যায়। তখন অভিমানে আইরিন নিজ শোবার ঘরে রাখা তরল কীটনাশক পান করেন। এতে সে গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে গ্যংড়াতে থাকেন। বিষয়টি পরিবার ও প্রতিবেশিরা টের পেয়ে মুমুর্ষ অবস্থায় আইরিনকে উদ্ধার করেন ও চিকিৎসার জন্য বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে নিয়ে যেতে থাকেন। কিন্তু নেবার সময় পথের মধ্যেই গাড়িতে নববধু আইরিন মূত্যুর কোলে ঢেলে পড়েন। আর স্ত্রীর মূত্যুর খবর জানার পরপরই স্বামী খাইরুল ইসলাম পালিয়ে যায়।

এ প্রসঙ্গে তাড়াশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন জানান, নববধু আইরিন খাতুনের বাবা মামলা করতে থানায় অবস্থান করছেন।

নয়াশতাব্দী/ইএইচ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ