ঢাকা, রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

তীব্র গরমে মারা যাচ্ছে মুরগি, আতঙ্কে খামারিরা

প্রকাশনার সময়: ০৫ মে ২০২৪, ২২:৪২ | আপডেট: ০৫ মে ২০২৪, ২২:৪৯

প্রচণ্ড তাপদাহে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় প্রতিটি পোলট্রি খামারে প্রতিদিন গড়ে ৮ থেকে ১০টি মুরগি হিট স্ট্রোকে মারা যাচ্ছে। এতে চলতি মৌসুমে খামারিদের ব্যাপক লোকসানে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যার ফলে আতঙ্কে রয়েছেন খামারিরা।

কলারোয়া উপজেলা উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুদাম নন্দী জানান, ‘উপজেলায় প্রায় ১২শ’র মতো পোল্ট্রি ও লেয়ার মুরগির খামার রয়েছে। এর মধ্যে দেশি জাতের মুরগির সংখ্যা প্রায় ২ লাখ ১০ হাজার, বয়লার মুরগি প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার এবং লেয়ার মুরগি প্রায় ৫০ হাজারের মতো।

গত কয়েক দিনের তীব্র তাপদাহে মানুষের পাশাপাশি বয়লার এবং লেয়ার মুরগি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে। ‘০ থেকে ২১’ দিনের পোলট্রি মুরগি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি বলে জানান তিনি।

উপজেলার কেঁড়াগাছি ইউনিয়নের কাঁকডাঙ্গা গ্রামের কুবরা পোলট্রি ফার্মের স্বত্বাধিকারী খাদিজাতুল কুবরা জানান, ‘গত কয়েকদিনের তীব্র গরমে ৫০০ সেডের ফার্মের খামারে ২২ থেকে ২৫ দিন বয়সী মুরগি গড়ে ৮ থেকে ১০টি প্রতিদিন মারা গেছে। এ থেকে প্রতিদিন ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ১৫’শ থেকে ১৮’শ টাকা।’

বালিয়াডাঙ্গা বাজারের পোলট্রি খাদ্য ও ঔষধ ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম জানান, সাধারণত যেসব খামারে মুরগির বয়স ২০ থেকে ২৫ দিন, সেইসব খামারের মুরগিগুলো আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। হিট স্ট্রোক থেকে মুরগি রক্ষা করার জন্য প্রতিদিন সকালে বায়োভেট পাউডার পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়ানো উচিত। এ ছাড়া দুপুরে হাইড্রোসল লিকুইড পানির সাথে মিশিয়ে মুরগির গায়ে স্প্রে করতে হবে।

উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুদাম নন্দী জানান, ‘যেসব খামারিরা বেশি বেশি স্টেরয়েড জাতীয় খাদ্য খাওয়ান, সেই সমস্ত মুরগি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা বেশি। ‘খামারের মুরগিগুলো হিট স্ট্রোক থেকে রক্ষার জন্য গুক্লোজ, স্যালাইন, নিরাপদ ঠান্ডা পানি বার বার খাওয়াতে হবে। ইলেকট্রিক ফ্যানের বাতাস দিতে হবে। খামারের চালের উপর চটের বস্তা দিয়ে ভিজিয়ে দিতে হবে।’

তিনি জানান, ‘সাধারণত আমাদের দেশের বয়লার মুরগিগুলো ২০ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে কিন্ত গত কয়েক দিন ধরে কলারোয়া এলাকায় ৩৮ ডিগ্রি থেকে ৪১ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা উঠা নামা করছে। এতে হিট স্ট্রোকে মুরগির মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। এজন্য বিকল্প ব্যবস্থা নিতে খামারিদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

এদিকে, এরূপ পরিস্থিতিতে খামারিদের মাঝে হাহাকার শুরু হয়েছে। ব্যাপক লোকসানের সম্মুখীন হতে পাবে বলে আশঙ্কা করছেন খামারি। এটি অব্যাহত থাকলে ব্যাংক ও বিভিন্ন এনজিও থেকে চড়া সুদে লোন নেয়া এবং খাদ্য ও পোল্ট্রি ঔষধের দোকান থেকে বাকি নেয়া খামারিরা দেনার দায়ে খামার বন্ধ করে দেয়ারও চিন্তা করছেন।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ