ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

খুঁটিতে বেঁধে পেটালো ছাত্রলীগ নেতাকে, ঠেকাতে আসেনি কেউ

প্রকাশনার সময়: ০১ মে ২০২৪, ১৩:৫৩

কক্সবাজার টেকনাফ হ্নীলা এলাকায় ফেসবুকে ছবি পোস্টে কমেন্ট করা নিয়ে তর্কের জেরে নাছির উদ্দীন নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে বিএনপির নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। এমন ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের পানখালী কবরস্থানের পাশে রাস্তার উপর এই ঘটনা ঘটে। পরে হ্নীলা দক্ষিণ যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক পল্লী চিকিৎসক নুরুল আজিম সোহেলের চেম্বারের সামনে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে রশি দিয়ে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় প্রহার করা হয়। এ নিয়ে পুরো উপজেলায় আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে।

ভুক্তভোগীর শিকার ছাত্রলীগ নেতার নাম নাছির উদ্দিন (২৬)। তিনি হ্নীলা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। ভিডিওতে মারধর করতে দেখা গেছে দুই যুবককে।

অভিযুক্তরা হলেন, হ্নীলার ৫ নং ওয়ার্ডের দরগাহ পাড়া এলাকার আবুল কাশের ছেলে ছাত্রদল কর্মী মামুন কবির (২২), সিকদার পাড়ার আব্দুল কাদেরের ছেলে শহিদ (১৯) ও হ্নীলা বাজার এলাকার ছৈয়দ নুরের ছেলে ইউনিয়ন দক্ষিণ যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল আজিম সোহেল (৩২)।

ভিডিওতে দেখা যায়, গায়ের শার্ট খুলে কোমরে রশি দিয়ে এক যুবককে টেনেহিঁচড়ে কয়েকজন বাজারের দিকে নিয়ে যান। সেখানে তারা উপর্যুপরি প্রহার করতে থাকেন। তিনি আকুতি-মিনতি করলেও নির্যাতনকারীরা থামছেন না।

এই ঘটনায় এলাকাবাসীসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মী মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা দ্রুত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এই ঘটনা ঘটিয়েছে দাবি করে নির্যাতনের শিকার ছাত্রলীগ নেতা নাছির উদ্দিন বলেন, ‘কয়েকমাস আগে সড়ক প্রশস্ত করতে কয়েকজনকে জমি ছেড়ে দিতে বাধ্য করেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী। এই ঘটনায় গত ২৪ মার্চ সাবেকুন নাহার নামের এক নারী তার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। এতে ইউনিয়ন দক্ষিণ যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল আজিম চেয়ারম্যানকে কটাক্ষ করে মন্তব্য করেন। সেটি আমার চোখে পড়লে রিপ্লাই সেকশনে আমি প্রতিবাদ জানাই।’

তিনি আরও বলেন,‘এরপর সে আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে থাকে। আমি সেটি খুব সাধারণ ভাবেই নিয়েছিলাম। আমার ছোট বোনের বিয়ে উপলক্ষ্যে দাওয়াতের কার্ড নিয়ে এক আত্মীয়ের বাসা থেকে ফিরছিলাম। আমি হ্নীলা পশ্চিম সিকদার পাড়া পল্লী চিকিৎসক সোহেলের চেম্বারের সামনে পৌঁছানো মাত্র যুবদল নেতা সোহেলের অনুসারী মামুন করিম, ও শহিদসহ কয়েকজন আমার গতিরোধ করে মারধর করতে শুরু করে। দুর থেকে সোহেল বেশি করে মারতে নির্দেশনা দিতে থাকেন। আমাকে বাঁচানোর জন্য একজনও এগিয়ে আসেনি।’

ফেইসবুক পোষ্ট মন্তব্য কিংবা প্রতিবাদ করার জেরে নয়; মূলত রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এমন নির্যাতন চালিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। এই ঘটনায় টেকনাফ থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী নাছির উদ্দিন।

হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘একজন ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদককে একটি স্টেশনের সামনে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করার মত দুঃসাহস দেখিয়েছে অভিযুক্তরা। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই এমনটা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করা হয়েছে।’

এই বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওসমান গনী বলেন, ‘এই ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

নয়াশতাব্দী/এনএইচ/ডিএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ