ঢাকা, বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৩ জিলকদ ১৪৪৫

আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে আহত ৩, অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর

প্রকাশনার সময়: ১২ এপ্রিল ২০২৪, ১৮:০৪

নড়াইলের লোহাগড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে স্থানীয় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারীসহ ৩ জন আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) দিবাগত রাতে উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের মন্ডলভাগ বাজারে এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগের তীর ইউপি চেয়ারম্যান মো. লাবু মিয়ার বিরুদ্ধে।

আহতরা হলেন- উপজেলার শালনগর গ্রামের মৃত সামাদ খানের ছেলে নাহিদ খান, বেল্লাল শেখের ছেলে আরাফাত শেখ ও আলী হাসানের স্ত্রী মো. রোজিনা খানম।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৮ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সংবলিত একটি টি-শার্ট পরেন স্থানীয় এক চা দোকানির ছেলে। এতে বিএনপিকর্মী আকিজের ছেলে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। স্থানীয় পর্যায়ের আওয়ামী লীগ কর্মী নাহিদ খান ঘটনার প্রতিবাদ জানান। পরে ঘটনা গড়ায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তরিকুল কাজী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা টুটুলের মধ্যে।

পরে বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় শালনগর ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান মো. লাবু মিয়া স্থানীয়ভাবে দুই পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে সালিশ করেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা চেয়ারম্যানের বিচারে অসন্তোষ প্রকাশ করে বাকবিতণ্ডায় জড়ান। এ ঘটনার পর নাহিদকে মন্ডলভাগ বাজারে একা পেয়ে সংঘবদ্ধ হামলা চালিয়ে আহত করে বিএনপি-কর্মীরা। খবর পেয়ে পাল্টা হামলা চালায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ঘটনাস্থলে সংঘর্ষের মাঝে পড়ে আহত হন আরও দুজন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আহত পথচারী রোজিনা খানম বলেন, ‘আমি বাজারে ওষুধ আনতে গিয়েছিলাম। ঝামেলা চলছিল দেখে তাড়াহুড়া করে বাড়ি ফিরতে গেলে কে বা কারা আমার মাথায় কোপ দেয়। আমি মাটিতে পড়ে যাই। পরে আমার কিছু মনে নেই।’

অন্যদিকে হামলায় আহত নাহিদকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশে যাওয়া অ্যাম্বুলেন্স আটকে ভাঙচুর চালিয়েছে হামলাকারীরা।

এ বিষয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালক পিকুল মোল্যা বলেন, ‘শালনগর থেকে ফোন আসে মারামারিতে আহত রোগীকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যেতে হবে। আমি দ্রুত ঘটনাস্থলে গেলে রোগী নাহিদকে নিয়ে আধা কিলোমিটার পার হওয়ার পর প্রতিপক্ষের লোকজন পথ আটকে দেয়। তারা ইটপাটকেল মেরে আমার অ্যাম্বুলেন্সের গ্লাস ভেঙে দেয়। পরিস্থিতি খারাপ দেখে আমি দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স চালাই।’

আহত নাহিদ খান বলেন, ‘চেয়ারম্যান নৌকা প্রতীকের হলেও তিনি বিএনপিকর্মীদের প্রশ্রয় দেন। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করার বিচার কি শুধু ধমক! আজকের এ ঘটনার মূলহোতা ইউপি চেয়ারম্যান লাবু মিয়া। তিনি পেছনে থেকে কলকাঠি নেড়ে ঘটনাটি ঘটিয়েছেন।’

তবে শালনগর ইউপি চেয়ারম্যান মো. লাবু মিয়া সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘স্থানীয় পর্যায়ে সামাজিক দ্বন্দ্বের সালিশ করে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকতে বলি। কিন্তু নাহিদ ও শিমুল বিচার নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন। পরে দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঘটে।’

কি নিয়ে বিরোধ হয়- এমন প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, আসলে কি বিষয় নিয়ে বিবাদ হয়, তা আমার ঠিক জানা নেই।

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করা হয়েছে এমন অভিযোগের সালিশ করছেন কিনা- প্রশ্নে লাবু মিয়া বলেন, না এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাঞ্চন কুমার রায় বলেন, সংঘর্ষের ঘটনা জানতে পেরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে এলাকায় পুলিশের অভিযান অব্যাহত।

নয়াশতাব্দী/এনএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ