ঢাকা, বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৩ জিলকদ ১৪৪৫

স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে বিয়ে করেন ৭৭ বছরের আ.লীগ নেতা

প্রকাশনার সময়: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৪:৫১

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর মুশুদ্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ৭৭ বছরের হযরত আলী মিয়ার বিরুদ্ধে ১৪ বছরের স্কুলছাত্রীকে বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে।

জন্মনিবন্ধন জালিয়াতি ও ফাঁদে ফেলে বিয়ের অভিযোগ এনে থানাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্কুলছাত্রীর বাবা।

পুলিশ বলছে, মেয়ে হারানোর অভিযোগ করায় কিশোরীকে উদ্ধার করা গেলেও ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি হযরত আলীর বিরুদ্ধে।

এদিকে প্রভাবশালী হয়যত আলী ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় প্রাণ ভয়ে মেয়েটির পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন অন্য জেলায়। এ ঘটনায় নিন্দা ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্বজনসহ এলাকাবাসী।

জানা যায়, কিশোরীর পরিবারটিকে বিভিন্ন সহযোগিতা দেওয়ার কথা বলে তাদের বাড়িতে যাতায়াত করতেন হযরত আলী। বিভিন্নভাবে প্রলোভনও দেখাতেন তিনি। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান চলাকালে কৌশলে ৯ম শ্রেণীর ওই স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে যান হযরত। মেয়েকে এক সপ্তাহ কোথাও খুঁজে না পেয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি ধনবাড়ী থানাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন তার বাবা। পরে পুলিশ মেয়েকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে পাঠায়। এদিকে অভিযোগ করায় মেয়েটির পরিবারকে নানাভাবে চাপ দিচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতা।

স্থানীয়রা জানান, স্ত্রী-সন্তান এবং নাতী-নাতনি থাকা সত্ত্বেও ৭৭ বছর বয়সে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীকে বিয়ে করেছেন হযরত আলী। পরে স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের মোটা অংকের উৎকোচ দিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন তিনি। মুশতাক-তিশার বিয়ের মত এই বিয়েটিও এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

কিশোরীর বাবা বলেন, আমরা গরিব মানুষ। তাই সহযোগিতার কথা বলে হযরত আমাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া করত। তাকে সরল মনে বিশ্বাস করতাম। মেয়েকে তুলে নিয়ে জোর করে বিয়ে করেছে। অভিযোগ করায় আমাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এখন প্রাণ ভয়ে পাশের জেলা জামালপুরে এক স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য তোফাজ্জল হোসেন বলেন, হযরত আলী নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে ওই কিশোরীর বয়স এফিডেভিট করে বিয়ে করেছেন বলে শুনেছি।

ভুক্তভোগী কিশোরী জানায়, বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে মোটরসাইকেল উঠিয়ে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ ও ভয়ভীতি দেখিয়ে উকিলের মাধ্যমে বয়স বাড়িয়ে বিয়ে করে। হযরত আলীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।

অভিযুক্ত হযরত আলী বলেন, প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ও কিশোরীর সম্মতিতে বিয়ে করেছি।

এ বিষয়ে ধনবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন বলেন, কিশোরীকে উদ্ধার করে বাবার হেফাজতে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সাবেক চেয়ারম্যান হযরত আলীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না করায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নয়াশতাব্দী/টিএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ