ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

ঘুষ ছাড়া মেলে না সেচ পাম্পের ছাড়পত্র!

প্রকাশনার সময়: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯:১১

কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসির) কুতুবদিয়ার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে সেচ পাম্পের ছাড়পত্র দিতে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

নিয়ম মাফিক আবেদনের পরও মাসের পর মাস বিএডিসির কর্মকর্তাদের দরজায় ধরনা দিলেও ঘুষ না দিলে মেলে না লাইসেন্স। এ নিয়ে ভুক্তভোগী সেচ পাম্পের লাইসেন্স প্রত্যাশী কৃষকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা।

লেমশীখালী ইউনিয়নের কৃষক ওসমান বিন জাফর নামের এক ভুক্তভোগী জানান, বুধবার বিকেলের দিকে আমার মোবাইলে কল দেন প্রকৌশলী মোজাম্মেল হকের সহযোগী মোরশেদ আলম। তিনি বলেন, বড়ঘোপ ফুলতালা গিয়ে সেচ পাম্পের ছাড়পত্র নিয়ে আসতে। তবে ছাড়পত্র নিয়ে আসতে তার স্যারকে খুশি করার জন্য ঘুষ নেওয়ার হিসাবও বুঝিয়ে দেন আমাকে। তিনি আমাকে বলেন, স্যারের জন্য ৩ হাজার, ছাড়পত্রের জন্য দেড় হাজার, যাতায়াত ও অন্যান্য খরচের জন্য আরও দেড় হাজার টাকা দিতে হবে। সর্বমোট ৬ হাজার টাকা দিলে বাড়িতে পৌঁছে যাবে সেচ পাম্পের ছাড়পত্র। যাচাই-বাছাই করার দরকার নেই বলে জানান তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আলী আকবর ডেইলের আরেক ভোক্তভোগী কৃষক বলেন, ছাড়পত্রের জন্য প্রকৌশলী মোজাম্মেল ও তার সহযোগী মোরশেদকে পাঁচ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। তারা টাকা ছাড়া ছাড়পত্র দেন না। নিরুপায় হয়ে টাকা দিয়ে ছাড়পত্র নিয়ে এসেছি। প্রকৌশলী মোজাম্মেল ও তার সহযোগী মোরশেদ সিন্ডিকেট করে সেবাপ্রার্থীদের কাছ থেকে জিম্মি করে ঘুষের টাকা আদায় করেন। ঘুষ আদায় করার পর ক্ষামাও চেয়ে নেন তারা দুইজনে।

একই গ্রামের আরেকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অগভীর লাইসেন্সের জন্য আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লাইসেন্স পান। পরে সহকারী প্রকৌশলীর সিন্ডিকেটকে টাকা না দেওয়ায় আবেদন স্থগিত করেন।

ভুক্তভোগী এক কৃষক বলেন, গত বছরেও লাইসেন্সের জন্য ব্যাংকে আবেদনের বিপরীতে অর্থ জমা দেন। পরে বিএডিসি অফিসে গেলে তার আবেদনের কিছুই পাননি। ফের আবেদন করে আজও তাকে লাইসেন্স দেওয়া হয়নি।

প্রকৌশলীর সহযোগী মোরশেদ বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ছাড়পত্রের জন্য কি খরচ হয়েছে সেটি বলা হয়েছে ওই কৃষককে। প্রকৌশলীর জন্য কোন টাকা দাবি করিনি।

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) কুতুবদিয়ার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক ঘুষ নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বেশি টাকা নেওয়া হয় না, খরচের জন্য এক থেকে দুই হাজার টাকা নেওয়া হয়। নিয়ম মেনে সেচ পাম্পের ছাড়পত্র দেওয়া হয়। তবে আমার সহযোগী মোরশেদকে টাকা দেওয়ার কথা কাউকে বলা হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাশেদুল ইসলাম বলেন, বিএডিসির ঘুষ বাণিজ্যের বিষয়টি তিনি অবগত না। খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান ইউএনও।

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ