অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে এই আহ্বান জানান তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, ‘তৈরি পোশাক ও ওষুধ শিল্প এলাকায় শ্রমিক ভাইবোনেরা তাদের অভিযোগ জানাতে গিয়ে ক্রমাগতভাবে এই শিল্পের কার্যক্রম পরিচালনা বন্ধ রাখতে বাধ্য করছেন। এটা আমাদের অর্থনীতিতে যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, তা মোটেই কাম্য নয়।’
‘এমনিতেই ছাত্র-শ্রমিক-জনতার বিপ্লবের পর যে অর্থনীতি আমরা পেয়েছি, তা নিয়ম নীতিবিহীন দ্রুত ক্ষীয়মাণ একটা অর্থনীতি। প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। আমরা এই অর্থনীতিতে প্রাণ সঞ্চারের চেষ্টা করছি। আমাদের উদ্যোগে সাড়াও পাচ্ছি। ঠিক এই সময় শিল্প কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে গেলে দেশের অর্থনীতিতে বিরাট আঘাত পড়বে। সেটা কিছুতেই কারো কাম্য হতে পারে না,’ যোগ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘শ্রমিক ভাইবোনদের অনেক দুঃখ রয়েছে। কিন্তু সেই দুঃখ প্রকাশ করতে গিয়ে আপনাদের মূল জীবিকাই বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে সেটা ঠিক হবে না। দেশের অর্থনীতি ধ্বংস প্রাপ্ত হলে সেটা ঠিক হবে না। মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে আলাপ করে এসব সমস্যার সমাধান আমরা অবশ্যই বের করবো। আপনারা কারখানা খোলা রাখুন। অর্থনীতির চাকা সচল রাখুন। দেশের অর্থনীতিকে সোজা হয়ে দাঁড়াতে দিন।’
মালিক পক্ষের কাছে অর্থনীতির দুর্বল স্বাস্থ্যকে সবল করে তুলতে শ্রমিকদের সঙ্গে বোঝাপড়া এবং কারখানা সচল রাখার আহ্বান জানিয়েছেন ড. ইউনূস।
ওষুধ ও তৈরি পোশাক শিল্প দেশের গৗরব উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এর মাধ্যমে শ্রমিকরা তাদের কর্মকুশলতা বিশ্বকে মুগ্ধ করেছে। এর সাফল্য এখন থমকে রয়েছে। আমরা এই দুই শিল্পকে তাদের সম্ভাব্য শীর্ষে নিয়ে যেতে চাই। দুর্বল করারতো প্রশ্নই ওঠে না, এই দুই শিল্পের কোথায় কোথায় বাধা আছে সেগুলো চিহ্নিত করে সমাধান করতে চাই। আমরা বিদেশি ক্রেতাদের একত্রিত করে তাদের সহযোগিতা চাইবো যেন বাংলাদেশের এই শিল্প দুটি বিশ্বের অন্য দেশের চেয়েও বেশি আস্থাযোগ্য হয়ে গড়ে উঠতে পারে। সবকিছুই সম্ভব যদি আমরা শ্রমিক মালিক সম্পর্কটা একটা নির্ভরযোগ্য, আনন্দদায়ক করে গড়ে তুলতে পারি।’ড. ইউনূস বলেন, ‘আমাদের সরকারের প্রথম মাস কাটল। দ্বিতীয় মাস থেকে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ার ভিত্তি হিসেবে নতুন শ্রমিক-মালিক সম্পর্কের সূচনা করতে চাই। এটা দেশের সবার কাম্য। দেশের নতুন প্রজন্ম নির্ভয়ে যেন তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে এগিয়ে যেতে পারে আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি।’
নয়াশতাব্দী/ইএইচ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ