পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে দেশের বিভিন্ন এলাকায় থাকা বিপুল পরিমাণ ‘অবৈধ সম্পদ’ জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এবার নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ২৪ কাঠা জমির ওপর বেনজীরের দৃষ্টিনন্দন ডুপ্লেক্স বাড়িটিও প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে নেয়া হচ্ছে।
শনিবার (৬ জুলাই) রূপগঞ্জের আনন্দ হাউজিং সোসাইটি এলাকার এই বাড়িতে আদালতের নির্দেশে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি সাঁটানো হবে বলে জানা গেছে।
দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম বলেন, এ সময় উপস্থিত থাকবেন- নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক, স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের লোকজন ছাড়াও দুদকের কর্মকর্তাদের।
এর আগে গোপালগঞ্জে বিশাল এলাকাজুড়ে রিসোর্ট, রাজধানীর গুলশানে ১০ হাজার বর্গফুটের ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট (চারটি ফ্ল্যাট একসঙ্গে), বান্দরবানে ২৫ একর বাগানবাড়িতে রিসিভার নিয়োগ দিয়ে তত্ত্বাবধানে নেয় প্রশাসন।
জানা গেছে, রূপগঞ্জের ২০২২ সালের দিকে বাড়িটি নির্মাণ করা হয়। বেনজীর আহমেদ দেশে থাকাকালীন মাঝেমধ্যেই এ বাড়িতে আসতেন, রাত্রিযাপনও করতেন বলে জানা যায়। সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় বাংলোবাড়িটিতে কেয়ারটেকারের পাশাপাশি দুটি কুকুরও রাখা হয়েছে।
দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১২ জুন আদালত তৃতীয় দফায় বেনজীরের আরও বিপুল পরিমাণ সম্পদ জব্দ করেছেন। সে তালিকায় এ বাংলোটিও রয়েছে। এরপর বাড়িটি দেখভালের জন্য জেলা প্রশাসককে রিসিভার নিয়োগ দেন আদালত। বাংলোটির মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা।
গত ৩১ মার্চ ‘বেনজীরের ঘরে আলাদিনের চেরাগ’ এবং ৩ এপ্রিল ‘বনের জমিতে বেনজীরের রিসোর্ট’ শিরোনামে একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠে আসে। অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষে গত ১৮ এপ্রিল অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। এ অনুসন্ধান শুরু হলে গত মে মাসের প্রথম সপ্তাহে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেশত্যাগ করেন বেনজীর।
বেনজীর আহমেদ ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি র্যাবের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পান। এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব পান বেনজীর। এরপর ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৫৯ বছর পূর্ণ হওয়ায় সরকারি চাকরি আইন অনুযায়ী অবসরে যান তিনি।
নয়াশতাব্দী/টিএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ