এবার গাজীপুরে এনবিআর সদস্য মতিউর রহমানের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া গেছে। একের পর এক সম্পদের খোঁজ মিলছে ছাগলকাণ্ডে আলোচিত এই কর্মকর্তার। এর বেশির ভাগই পুবাইল থানার খিলগাঁও মৌজায়। রয়েছে জমি দখল, মিথ্যা মামলা দিয়ে নিরীহ মানুষকে হয়রানিসহ নানা অভিযোগ।
খিলগাঁও মৌজা গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে পড়েছে। এখানেই আছে মতিউরের পরিবারের আপন ভুবন পিকনিক অ্যান্ড শুটিং স্পট নামের রিসোর্ট।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ৬০ বিঘা জমির ওপর গড়ে তোলা এই রিসোর্টের ৩৫ বিঘার মালিক তিনি ও তার প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ।
আপন ভুবনের নামে ৫ একর ৭৭৭ শতাংশ জমি নামজারি ও জমাভাগ করা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। স্থানীয়রা জানান, মতিউর রহমান ও লায়লা কানিজের অনেক আগে থেকে টঙ্গীতে যাতায়াত ছিল। পুবাইলের খিলগাঁওয়ের আমিনুল ইসলামের সঙ্গে তাদের সখ্য হয়। সেই সূত্রে আমিনুলের বাড়ির আশপাশে তাদের নামে ৩৫ বিঘা জমি কেনেন। পরে আরও কিছু জমি কেনা হয়। এর সঙ্গে স্থানীয়দের কাছ থেকে আরও জমি বার্ষিক ভিত্তিতে ভাড়া নিয়ে ‘আপন ভুবন’ করা হয়।
গাজীপুর জেলা প্রশাসনের রাজস্ব বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, খিলগাঁও মৌজায় ৩৬৫৬ নম্বর জোত নম্বরে মতিউর রহমানের নামে ২৭ শতাংশ এবং ৪২৪৯ নম্বর জোতে ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ জমি নামজারি করা হয়েছে। একই মৌজায় তার স্ত্রী লায়লা কানিজের নামে ৩৪৫০ নম্বর জোতে ১৪ দশমিক ৫০ শতাংশ জমি খারিজ করা হয়েছে।
খিলগাঁও মৌজাতেই মতিউর-লায়লা দম্পতির ছেলে আহম্মেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবের নামে ৩৬৪৮ নম্বর জোতে ১৯ শতাংশ, ৪৪১৫ নম্বর জোতে ৭.২২ শতাংশ, ৪৪১৬ নম্বর জোতে ৫৫ শতাংশ, ৩৯৫০ নম্বর জোতে ২২ দশমিক ৫০ শতাংশ জমি নামজারি ও জমাভাগ করা হয়েছে। একই মৌজায় মেয়ে ফারজানা রহমানের নামে ৩৯২৫ নম্বর জোতে ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ, ৩৬৪৫ নম্বর জোতে ২৬ দশমিক ৫০ শতাংশ জমি খারিজ করা হয়েছে। এই চারজনের যৌথ নামে ৩৫৫৭ নম্বর জোতে ৪৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ এবং প্রথম স্ত্রী ও অর্ণবের নামে ৩৬৫২ নম্বর জোতে ৪৫ শতাংশ জমি নামজারি ও জমাভাগ করা রয়েছে।
এছাড়া লায়লা কানিজের নামে-বেনামে গাজীপুরে পাঁচ কাঠা, পুবাইলে ৬ দশমিক ৬০ শতাংশ ও ২ দশমিক ৯০ শতাংশ, বাহাদুরপুরে ২৭ শতাংশ, মেঘদুবীতে ৬ দশমিক ৬০ শতাংশ এবং ধোপাপাড়ায় ১৭ শতাংশ জমি থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।
এদিকে টঙ্গীতে মতিউরের ভাইয়েরও রয়েছে এসকে ট্রিমস নামের একটি বিশাল কারখানা। সেটি নিয়েও উঠছে নানা কথা। দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে এরই মধ্যে তিন সদস্যের কমিটি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। এ পরিস্থিতিতে গা ঢাকা দিয়েছেন মতিউর রহমান। এছাড়া দেশ ছেড়েছেন মতিউরের দ্বিতীয় স্ত্রীও তার সন্তানরা।
নয়াশতাব্দী/টিএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ